মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার অজুহাতে আবারও কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিনসহ নতুন করে আরও ছয়টি দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে এই নতুন নির্দেশনাটি কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপি নিশ্চিত করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে নতুন করে অভিবাসন বিতর্ক ও কূটনৈতিক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
নতুন করে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত পাসপোর্টধারী, সিরিয়া, মালি, নাইজার, বুরকিনা ফাসো এবং দক্ষিণ সুদান। এছাড়া এর আগে আংশিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা লাওস ও সিয়েরা লিওনকে এখন পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস স্পষ্ট জানিয়েছে, যে দেশগুলো বিদেশে স্ক্রিনিং ব্যবস্থা, তথ্য আদান-প্রদান এবং যাচাইকরণ প্রক্রিয়ায় মার্কিন মানদণ্ড বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, মূলত তাদের ওপরেই এই খড়গ নেমে এসেছে। এছাড়াও উচ্চমাত্রার ভিসা ওভার-স্টে রেট বা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করার প্রবণতা এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ঝুঁকিকে এই সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞা সবার জন্য সমান নয়। হোয়াইট হাউসের নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রিন কার্ডধারী বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা, কূটনীতিক এবং ইতিমধ্যে বৈধ ভিসা প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এই কড়াকড়ি প্রযোজ্য হবে না। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই দেশগুলো যদি নিরাপত্তা ও তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসনের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য উন্নতি’ প্রদর্শন করতে না পারে, তবে এই নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকালের জন্য বহাল থাকবে। সমালোচকরা এই পদক্ষেপকে ট্রাম্পের রক্ষণশীল অভিবাসন নীতির চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন।
উল্লেখ্য যে, ট্রাম্পের এই তৃতীয় দফা নিষেধাজ্ঞার পর পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশের সংখ্যা এখন ২০-এ দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে আফগানিস্তান, মিয়ানমার, ইরান ও ইয়েমেনের মতো দেশগুলো আগে থেকেই অন্তর্ভুক্ত ছিল। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বছরের শুরুতেই এমন সিদ্ধান্ত মুসলিম প্রধান দেশগুলো ও ফিলিস্তিনিদের ওপর বড় ধরনের মানসিক ও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবে।



















