জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে একের পর এক শীর্ষ নেতার পদত্যাগের মিছিলে এবার যুক্ত হলো আরও একটি ভারী নাম। দলটির কৃষক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী এবং মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী আনুষ্ঠানিকভাবে এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
পদত্যাগের কারণ: ‘ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা’ ও ‘আদর্শের ঘাটতি’ ফেসবুক পোস্টে আজাদ খান ভাসানী এনসিপি ছাড়ার পেছনে মূলত দলের আদর্শিক বিচ্যুতি এবং ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি লেখেন, ‘‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত লড়াইয়ের ধারাবাহিক অধ্যায় হিসেবে মনে করেছিলাম। কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা, গণমানুষের প্রতি দরদ ও ত্যাগের যে গভীরতা প্রয়োজন, এখানে তার স্পষ্ট ঘাটতি আমি অনুভব করেছি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এনসিপির প্রত্যাশিত সাফল্য দেখা যায়নি।’’ মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতেই তিনি এই সম্পর্কচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
পদত্যাগের হিড়িক জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এনসিপির জোটবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকেই দলটিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনে যারা পদত্যাগ করেছেন বা সরে দাঁড়িয়েছেন:
-
ডা. তাসনিম জারা: জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব।
-
খালেদ সাইফুল্লাহ: যুগ্ম আহ্বায়ক ও তাসনিম জারার স্বামী।
-
ডা. তাসনূভা জাবীন: যুগ্ম আহ্বায়ক।
-
মীর আরশাদুল হক: যুগ্ম সদস্যসচিব (তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন)।
-
মনিরা শারমিন: নওগাঁ-৫ আসনের প্রার্থী ও যুগ্ম আহ্বায়ক (নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন)।
-
অ্যাডভোকেট মনজিলা সুলতানা ঝুমা: খাগড়াছড়ির প্রধান সমন্বয়কারী (নির্বাচন বর্জন করেছেন)।
আজাদ খান ভাসানীর এই পদত্যাগ তরুণদের নিয়ে গঠিত এনসিপির জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে যখন নির্বাচনের মাত্র দেড় মাস বাকি।



















