close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

এনসিপির সভায় বৈষম্যবিরোধী নেতাকে হাতুড়িপেটা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মাদারীপুরে এনসিপির কর্মিসভায় ঘটে গেল ভয়াবহ এক হামলা। জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহকে সভার ভেতরে কুপিয়ে ও হাতুড়িপেটা করে গুরুতর জখম করে ফেলে রাখে একদল নেতা। এই ঘটনা আতঙ্ক ছ..

রাজনীতির সভায় অংশ নিতে এসে নিজ দলের নেতাদের নির্মম হামলার শিকার হলেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ। বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে শহরের ভূঁইয়া কমিউনিটি সেন্টারে এনসিপির এক কর্মিসভায় ঘটে এই চাঞ্চল্যকর হামলার ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শী ও সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা এটিকে একটি পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণ বলে অভিযোগ তুলেছেন।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, ওইদিন বিকেলেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে এনসিপির একটি কর্মিসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। সভা শুরুর আগেই হঠাৎ করে কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে উত্তেজনা দেখা দেয়। এরই মধ্যে জেলা কমিটির সদস্য রাতুল হাওলাদার ও আদিল মাহমুদ টুটুলের নেতৃত্বে একদল কর্মী হঠাৎ মাসুম বিল্লাহর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয় মাসুমকে। এরপর হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক মারধর চালানো হয় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে।

হামলার সময় সেখানে উপস্থিত অন্যরা ছুটে এসে মাসুমকে রক্ষা করতে চেষ্টা করলে হামলাকারীরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। মুমূর্ষু অবস্থায় মাসুমকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাঁকে ঢাকায় স্থানান্তর করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথা, পিঠ ও হাতে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পুলিশ। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘‘ঘটনার পরপরই হামলাকারীরা এলাকা ত্যাগ করেছে। তাদের ধরতে পুলিশের একাধিক ইউনিট মাঠে নেমেছে। আইনগত প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে এবং দোষীদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আকাশ মাতুব্বর বলেন, ‘‘এটা একটা ন্যাক্কারজনক পরিকল্পিত হামলা। রাতুল ও আদিলের নেতৃত্বে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা মেনে নেব না।’’

জেলা আহ্বায়ক মো. নিয়ামতউল্লাহ কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘‘অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব। বারবার আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা হচ্ছে—এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে আমরা আর চুপ থাকব না।’’

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতা থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। একটি দলীয় কর্মিসভায়, যেখানে আদর্শ ও মতবিনিময়ের কথা, সেখানে প্রকাশ্যে সহকর্মীর ওপর এমন সহিংসতা একটি দলের মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

বর্তমানে মাসুম বিল্লাহ ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা সংকটজনক হলেও স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। একসময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় মুখ হিসেবে পরিচিত এই ছাত্রনেতার ওপর এই হামলা নতুন করে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ছাত্র রাজনীতির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রশাসনের উপর এখন বড় চ্যালেঞ্জ—এই ঘটনার বিচার কত দ্রুত ও কার্যকরভাবে নিশ্চিত করা যায়।

نظری یافت نشد