হাইকোর্টের একটি রিট খারিজের পর দেশের বিচারব্যবস্থার মর্যাদা নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন শনিবার (২৪ মে) তাকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, সারজিস আলম যেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা চান এবং একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের জনগণের কাছেও ক্ষমা চান। এই কাজ তাকে দুই ঘণ্টার মধ্যে করতে বলা হয়েছে।
অন্যথায়, তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন আইনজীবী।
রিট খারিজ ও মন্তব্যের পটভূমি
গত ২২ মে, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ নিতে বাধ্য করার নির্দেশনা চেয়ে দায়ের করা একটি রিট হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত রায়ে বলেন, “এই রিট করার এখতিয়ার রিট আবেদনকারীর নেই।” পাশাপাশি, আদালত আরও মন্তব্য করে, “নির্বাচনী ফোরামের মামলা এখানে আসা অনুচিত হয়েছে।”
এরপরেই ফেসবুকে সারজিস আলমের মন্তব্য
রায়ের পর ওইদিনই (২২ মে) সকাল ১১টা ৪৯ মিনিটে সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন:
“মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায় তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কি?”
এই মন্তব্যকে আদালতের মর্যাদাহানিকর ও বিচার বিভাগের প্রতি অবমাননাকর বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাকে দ্রুত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন
সারজিস আলমের এই মন্তব্য ও তাকে ঘিরে আইনি প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে। কেউ কেউ এটিকে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতার ওপর হুমকি হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ এটিকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করছেন।
উপসংহার
আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশের প্রেক্ষিতে সারজিস আলম কী প্রতিক্রিয়া দেখান, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।