close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

এবার যমুনা অবরুদ্ধ করার ঘোষণা দিলেন ছাত্রদল সভাপতি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাবি ছাত্র সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে এবার যমুনা ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিল ছাত্রদল। শাহবাগে বিক্ষোভের পর সংগঠনের সভাপতি বললেন—প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাও করা হবে। টালবাহানায় মিলবে ভয়াবহ কর্মসূচি!..

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে এবার আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিল ছাত্রদল। বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে সংগঠনের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন—এ ঘটনায় প্রশাসনের টালবাহানা চললে ছাত্রদল চুপ থাকবে না, প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ ঘেরাও করা হবে।

বিকাল ৫টায় শাহবাগ মোড়ে আয়োজিত কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণার সময় রাকিব বলেন,
“খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাম্য হত্যার বিচার না হলে, এবং জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার না করলে ছাত্রদল এমন কর্মসূচি ঘোষণা করবে যা এদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন হবে। প্রয়োজনে যমুনা ঘেরাও করা হবে।”

সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন,
“আজকের মতো অবস্থান কর্মসূচি শেষ করছি, কিন্তু এ আন্দোলন থেমে নেই। বিচার না হলে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হবে আরও ভয়ংকর।”


শাহবাগ অবরোধ: সকাল থেকে উত্তাল রাজধানী

এর আগে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। শাহবাগ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে রাখেন তারা। প্রায় ছয় ঘণ্টার মতো চলা এই কর্মসূচির ফলে ওই এলাকায় যান চলাচল একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে।

বিক্ষোভে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা “সাম্য হত্যার বিচার চাই”, “ঘাতকদের ফাঁসি চাই” ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ছাত্রদল নেতারা দাবি করেন, সাম্যকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং এখন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।


কে ছিলেন সাম্য?

নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

সাম্য থাকতেন হলের ২২২ নম্বর কক্ষে। ১৩ মে রাতে হলের বাইরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে রাত ১২টার দিকে সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


হত্যা মামলা ও তদন্তের অগ্রগতি

নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম পরদিন শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ ঘটনার পরপরই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। ১৫ মে তাদের কারাগারে পাঠানো হয় এবং আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তবে ছাত্রদল দাবি করেছে, এখন পর্যন্ত মূল পরিকল্পনাকারীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে মূল অভিযুক্তদের রক্ষা করছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই ছাত্রদল ক্রমাগত কর্মসূচি দিচ্ছে এবং আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াচ্ছে।


চাপ বাড়াচ্ছে ছাত্রদল, প্রশাসন চাপে

ছাত্রদল এবার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—সাম্য হত্যার বিচার না হলে রাজপথ উত্তাল হবে। শুধু শাহবাগ নয়, প্রয়োজনে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের বাসভবন ‘যমুনা’ ঘেরাও করতেও তারা প্রস্তুত। এ আন্দোলন শুধু একজন ছাত্র নেতার হত্যার বিচারের জন্য নয়, বরং এটি হয়ে উঠছে সরকারের বিচারহীনতার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের এক জোরালো প্রতিবাদ।

এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এই দাবির মুখে কতটা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, নাকি ছাত্রদের হুঁশিয়ারি বাস্তবে পরিণত হয়!

نظری یافت نشد