আজ মঙ্গলবার দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের আটটি জেলায় ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে জানানো হয়েছে পূর্বাভাসে। সকাল থেকেই এই এলাকাগুলোতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। যেসব জেলায় এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে, সেগুলো হলো: যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।
আজ ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এসব জেলার আভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বা পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিমি গতির অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সব নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর ফলে নৌচলাচল কিছু সময়ের জন্য ব্যাহত হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়াবিদদের মতে, এই ধরণের ঝড় সাধারণত কালবৈশাখীর ধাঁচে হলেও বেশ ক্ষতিকর হতে পারে। হঠাৎ দমকা বাতাস, প্রবল বৃষ্টি এবং বজ্রপাত — এই তিনটির সম্মিলন ঘটলে জনজীবনে এবং নৌযানে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব এলাকায় ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে, সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশেষ করে নদীপথে চলাচল করা যাত্রী ও মাঝিদের জন্য এই বার্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। যদি বৃষ্টি বা ঝড় শুরু হয়, তবে নৌযানগুলিকে তীরে ভিড়িয়ে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিতে হবে। একইসাথে স্থানীয় জেলেদের সাগরে বা নদীতে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঝড়ের সময় বা আগে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে সাবধান থাকা, খোলা জায়গায় না থাকা, গাছপালা বা ল্যাম্পপোস্টের নিচে আশ্রয় না নেওয়া, নদীপথে চলাচল না করা ইত্যাদি সতর্কতা মানা উচিত। বাড়ির ছাদে কোনো হালকা বস্তু থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনও জনগণকে সজাগ থাকতে বলেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে ঝড়সংক্রান্ত দ্রুত রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। তারা পরিস্থিতির নজরদারি করছে।
দেশের আবহাওয়া হঠাৎ করেই বদলে যাচ্ছে, আর এরই মাঝে এই ঝড়ের পূর্বাভাস সাধারণ মানুষের মনে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। যশোর থেকে কক্সবাজার — এই বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস মানে হলো, লাখো মানুষের জীবনযাত্রা সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।
তাই সবাইকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তা মেনে চলা এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।