মিসরের কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে ঢাকা ত্যাগ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাত ১টা ২০ মিনিটে তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়ে যায়।
বৈশ্বিক নেতাদের অংশগ্রহণ
ঢাকা ছাড়ার আগে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাড়াও ইরান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান এবং মিশরের রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশ নিচ্ছেন। উপস্থিত নেতাদের মধ্যে থাকবেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। এছাড়া মালয়েশিয়া ও নাইজেরিয়ার প্রতিনিধিরাও অংশ নেবেন।
সম্মেলনের প্রতিপাদ্য: তরুণদের জন্য বিনিয়োগ
এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ইনভেস্টিং ইন ইয়ুথ অ্যান্ড সাপোর্টিং স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ, শেপিং টুমরো’স ইকোনমি’। ডি-৮ সম্মেলনের মঞ্চ থেকে এসএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প) খাতে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা হবে। অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ এবং তাদের উদ্যোক্তা সক্ষমতা কীভাবে বিশ্ব অর্থনীতির অংশ হতে পারে, তা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলবেন।
বিশেষ বৈঠকের সম্ভাবনা
আবুল কালাম আজাদ মজুমদার আরও জানান, সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে অর্থনৈতিক এবং উন্নয়নমূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
ডি-৮ এর ইতিহাস ও গুরুত্ব
ডি-৮ (ডেভেলপিং-৮) হলো অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা, যা ১৯৯৭ সালের ১৫ জুন ইস্তাম্বুল ঘোষণার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। সংস্থাটির সদস্য দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্ক। এর লক্ষ্য বিশ্ব অর্থনীতিতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান শক্তিশালী করা, বাণিজ্যের নতুন সুযোগ তৈরি করা এবং উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ানো।
বাংলাদেশের গুরুত্ব
বাংলাদেশের জন্য এবারের ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তরুণ উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ এবং দেশের এসএমই খাতকে আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ এটি।
ডি-৮ এর মত গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. ইউনূসের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত খুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
نظری یافت نشد