রাজধানী ঢাকাকে ভারতের নয়াদিল্লির মতো ফেডারেল সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ বা ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ গঠনের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। জনসংখ্যা ও পরিষেবার ব্যাপ্তি বিবেচনায় এনে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চারটি বিভাগকে চারটি প্রদেশে রূপান্তরেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশনের সুপারিশের বিস্তারিত
বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। এর আগে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীসহ অন্যান্য সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও কার্যকর করতে কমিশন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সংখ্যা কমানোর সুপারিশ করেছে। এই সুপারিশ অনুযায়ী, মন্ত্রণালয় ২৫টি এবং অধিদফতর ৪৪টি করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
চারটি প্রদেশে ভাগ করার পরিকল্পনা
কমিশন আরও সুপারিশ করেছে যে, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে সারাদেশকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করা হবে। এই পরিকল্পনার আওতায় জেলা প্রশাসকদের পদবি পরিবর্তনসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি
গত ৮ আগস্ট সরকার গঠনের পর রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনার জন্য ছয়টি পৃথক কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে গত ১৫ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়। আজ বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনও সরকারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রাজধানী মহানগর সরকার: সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ ও সুবিধা
এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে, ঢাকার নগর ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, উন্নত নাগরিক পরিষেবা ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকলেও, এর বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, ভারতের দিল্লির মতো পৃথক প্রশাসনিক কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর বড় ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি, সাধারণ নাগরিকদের এই পরিবর্তনের প্রতি গ্রহণযোগ্যতাও বিবেচনায় নিতে হবে।
এখন দেখার বিষয়, সরকার এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করে কিনা এবং এর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে।
Aucun commentaire trouvé