ভোটের মাঠে এবার মানুষের বদলে রোবট? এমন ব্যতিক্রমী, বিস্ফোরক ও তীব্র ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক আনিস আলমগীর। আজ সোমবার (১৯ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে তিনি সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন—"দেশে কি এতই লোকের অভাব পড়েছে যে এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ভোট দেবে?"
এই মন্তব্যের পেছনে প্রেক্ষাপট হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন বিএনপি-জামায়াত ঘরানার কিছু রাজনৈতিক প্রচার ভিডিও, যেখানে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি চরিত্রগুলোর মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ভিডিওগুলোতে মানুষসদৃশ ডিজিটাল অবয়বে কৃত্রিম কণ্ঠে বলা হচ্ছে কে কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে—তাতে ‘মানুষ’ কথা বলছে বলেই মনে হয়। কিন্তু ভালোভাবে লক্ষ্য করার পর দেখা যায়, তারা আদতে মানুষ না—AI দ্বারা তৈরি ডিজিটাল কনটেন্ট।
আনিস আলমগীর ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, “পরে বুঝলাম, মানুষ না… এ তো এআই। দেশে কি এতই লোকের অভাব পড়েছে, যে এখন এআই ভোট দেবে? তাদের মডেল বানাতে হবে?”
এরপর আরও একধাপ এগিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আগামী নির্বাচনে কি তাহলে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ই হবে আসল ভোটার?”—এমন সম্ভাবনাকে কৌতুকের রূপ দিয়ে তিনি ব্যঙ্গ করেন, "চিন্তা করেন, ভোটকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে রোবট বলে, ‘আমি ভোট দিচ্ছি গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে!’ জয় হোক চিপস ও কোডের।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে আনিস আলমগীর রাজনৈতিক প্রচারনায় এআই ব্যবহারের বিপজ্জনক দিকগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন বলেই বিশ্লেষকদের ধারণা।
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের উচিত এখনই রোবটদের জন্য আলাদা বুথ বসানো।” বিষয়টিকে হালকা ব্যঙ্গাত্মক রসের মোড়কে তুলে ধরলেও, ভেতরে লুকিয়ে আছে এক গভীর রাজনৈতিক বার্তা—যেখানে তিনি বাস্তব ভোটারদের অপব্যবহার, বিভ্রান্তিমূলক প্রচার এবং প্রযুক্তির অপচয় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
তিনি তির্যকভাবে বলেন, “অপেক্ষা করছি, সংস্কারবাদীরা এটা নিয়ে কী ফতোয়া দেয়, সেটা দেখার জন্য। এনসিপি এই কাজে পিছিয়ে আছে কেন? নির্বাচন কমিশনে বিচার নিয়ে যাবে না?”
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলী রিয়াজকে উদ্দেশ করে বলেন, “আলী রিয়াজ কমিটির বক্তব্য কি এআই দিয়ে ভোটের ক্যাম্পেইন নিয়ে?”
এই পুরো মন্তব্যপত্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এটিকে যুগোপযোগী প্রতিবাদ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন—এটা শুধু ব্যঙ্গ নয়, বাস্তবতার করুণ প্রতিচ্ছবি।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য শুধু মজার উপাদান নয়, বরং এটি আমাদের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তোলে—কোথায় যাচ্ছে ভোটারদের প্রতিনিধি ভূমিকা? এবং প্রযুক্তির ব্যবহারের এই দিকটিতে যদি কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকে, তাহলে তা ভবিষ্যতে আরো বড় বিভ্রান্তি এবং গণতন্ত্রের ওপর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
উল্লেখ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (AI) এখন বিশ্বব্যাপী নানা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এর অপব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে প্রযুক্তিবিদ ও গণতন্ত্রপন্থীদের মধ্যে।
আনিস আলমগীরের এই পোস্ট সেই আশঙ্কাকেই আরও উসকে দিয়েছে—যেখানে ভোটাধিকার আর প্রযুক্তির ব্যবহারের মধ্যে বিস্ময়কর দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			