close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ড. মাসুদের খনন করা খালের পানিতে প্রাণ ফিরে পেল কৃষকরা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বছরের পর বছর খরায় ধুঁকতে থাকা রাজাপুরের কৃষকরা যখন বৃষ্টির অপেক্ষায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন, তখন আশার আলো হয়ে এলেন ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। নিজের উদ্যোগে খনন করালেন ‘অদৃশ্য’ খাল, যার পানিতে কৃষিজমিতে ফিরে এস..

ড. মাসুদের খনন করা খালে ফিরে এল স্রোতধারা, খুশিতে আত্মহারা রাজাপুরের কৃষকরা

বাউফল (পটুয়াখালী) থেকে:
বাংলাদেশের কৃষকদের জীবন বরাবরই সংগ্রামের। প্রকৃতির অনিয়ম, সরকারি অবহেলা আর রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ছেঁকা খেয়ে খেয়ে তারা যেন ক্লান্ত। এমন অবস্থায় একজন মানুষ যদি নিঃস্বার্থভাবে তাদের পাশে দাঁড়ান, তবে সেই মানুষটি হয়ে ওঠেন বাস্তবের নায়ক। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ঠিক তেমন একজন।

চাষাবাদ যেখানে রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল খরার কারণে, সেখানে নতুন প্রাণ ফিরেছে ড. মাসুদের একক প্রচেষ্টায়। তিনি শুধু কথার মানুষ নন, তিনি কাজে বিশ্বাসী। তারই প্রতিফলন ঘটেছে বাউফলের কালিশুরি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পশ্চিম রাজাপুর এলাকায়।

‘অস্তিত্বহীন’ খালকে করলেন জীবন্ত

ড. মাসুদ ছিলেন দিশেহারা কৃষকদের ভরসার প্রতীক। যখন কৃষকরা পানির জন্য প্রতিদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতেন, তখন তিনিই চিন্তা করেন স্থায়ী সমাধানের। তিনি কোনো সরকারি প্রকল্প বা অনুদানের অপেক্ষা না করে নিজ উদ্যোগে শুরু করেন খাল খননের কাজ। চালতাবাড়ী এলাকার ক্ষুদ্র এক খাল— হোতা খাল—যেটি বহু বছর যাবত শুকিয়ে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, তাকে আবার জীবিত করে তোলার কাজ হাতে নেন।

যে খালটিতে বিন্দুমাত্র পানিও ছিল না, এখন সেখানে ঢলঢল করে বইছে স্রোতধারা। এই খাল খননের কাজটি সম্পূর্ণ হলে তা থেকে সেচ সুবিধা পাচ্ছে পুরো রাজাপুর এলাকার কৃষিজমি। এর ফলে কয়েকশো কৃষক আবারও জমিতে বীজ বপনের সাহস পাচ্ছেন।

‘বৃষ্টির প্রতীক্ষা’ থেকে ‘নিশ্চিত পানি সরবরাহ’-এ পরিবর্তন

কৃষকরা জানিয়েছেন, বছরের পর বছর তারা শুধু বৃষ্টির ওপরই নির্ভর করতেন। সেচের কোনো সুব্যবস্থা ছিল না। সেই পরিস্থিতি এখন একেবারে বদলে গেছে। এক কৃষক বলেন, “আগে আমরা এই জমি ফেলে রাখতাম। এখন সেই জমিতেই পানি দিয়ে চাষ শুরু করছি। এটা শুধু পানির ব্যবস্থা না, এটা আমাদের জীবনে নতুন আশার আলো।”

আরেক কৃষক, আবেগমথিত কণ্ঠে বলেন, “আমরা এমন নেতা আগে দেখি নাই। ভোট এলেই নেতারা আসে, বক্তৃতা দিয়ে চলে যায়। কিন্তু মাসুদ সাহেব আমাদের কথা ভাবেন, কাজ করেন। উনি আমাদের কাছে আশীর্বাদ।”

রাজনীতিকে পেছনে ফেলে মানবিক উদ্যোগ

ড. মাসুদের উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়েছে বাউফলের সাধারণ জনগণ এবং সচেতন মহল। তারা বলছেন, “রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে সাধারণ মানুষ উন্নয়ন চায়। চাষীরা চায় শুধু একটু সহযোগিতা—পানি, সার, বীজ আর একটু মূল্যায়ন। সেই সহযোগিতা করে চলেছেন ড. মাসুদ। উনি প্রমাণ করেছেন, শুধু কথায় নয়, কাজে কৃষকবান্ধব হওয়া যায়।”

‘ছাতি’ দিয়ে ভাইরাল হওয়া মানুষটি

এটাই প্রথম নয়। এর আগেও ড. মাসুদ বিভিন্ন সময়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কখনও কৃষি উপকরণ বিতরণ, কখনও রোদের মধ্যে কৃষকদের ছাতা উপহার দিয়ে সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন তিনি। সব সময় নিজেকে মাঠের একজন কর্মী হিসেবে দেখিয়ে এসেছেন। আর সেই ধারাবাহিকতায় খাল খননের কাজ তার কৃষকপ্রেমের আরও এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

বিভিন্ন কৃষি সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলছেন, “ড. মাসুদের এই উদ্যোগটি একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। খাল পুনঃখনন শুধু কৃষিতে নয়, পুরো স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই পানি দিয়ে চাষাবাদ শুরু হলে শ্রমিক, ব্যবসায়ী, ট্রান্সপোর্ট—সবার কাজ বাড়বে।”


 

রাজনীতির গোলকধাঁধায় যখন মানুষ বিশ্বাস হারাতে বসেছে, তখন ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মতো মানুষদের কার্যক্রম যেন সত্যিকারের পরিবর্তনের আশ্বাস দেয়। তিনি প্রমাণ করেছেন, ‘আমার দেশের চাষা’-দের পাশে দাঁড়ানো মানেই দেশ গড়ার কাজ করা। রাজাপুরের মাঠ এখন শুধুই চাষযোগ্য জমি নয়, এটি একটি জীবন্ত কাহিনি—একজন মানুষের নিষ্ঠা আর ভালোবাসার কীর্তিগাথা।

कोई टिप्पणी नहीं मिली