নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা গরিব উল্লাহ পাড়ায় প্রবেশ করে। তারা মানিককে টার্গেট করে মুখে অস্ত্র ঢুকিয়ে কাছ থেকে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রাণ হারান। হত্যার নৃশংসতা দেখে এলাকাবাসী হতবাক হয়ে যায়। কেউ কেউ এই ঘটনাকে "পেশাদার কিলিং মিশন" বলে মন্তব্য করছেন।
রাউজান থানার দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার এসআই নাসিম কালবেলা সংবাদমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, "ঘটনাটি রাতে ঘটেছে, আমরা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছি। নিহত মানিকের রাজনৈতিক পরিচয় ও পূর্ব শত্রুতার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলির শব্দে তারা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় মানিক পড়ে আছেন। তবে তখনও দুর্বৃত্তদের কাউকে সনাক্ত করতে পারেননি কেউ।
নিহত মানিক স্থানীয়ভাবে যুবদলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতেন এবং বিভিন্ন সময় সরকারবিরোধী আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন বলে স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
হত্যার ঘটনার পর থেকেই এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। মানিকের মৃত্যুতে শোকাহত পরিবার ও প্রতিবেশীরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
স্থানীয় যুবদল ও বিএনপি নেতাকর্মীরা দাবি করছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং এর পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধন থাকতে পারে। তারা দ্রুত বিচার ও দায়ীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠানো হয়েছে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে তারা।
এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, “আমরা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি না যে মানিককে এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হবে। এটি নিঃসন্দেহে একটি বার্তা দেওয়ার মত ঘটনা—আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তবে এর বিচার চাই।”
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে সম্প্রতি রাজনৈতিক সহিংসতা এবং টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাউজানের সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড শুধু একটি ব্যক্তি হত্যা নয়, বরং এটি একটি বার্তা বহন করছে—যেখানে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব রক্তাক্ত রূপ নিচ্ছে।
এখন এলাকাবাসীর একটাই দাবি—যেন অপরাধীরা শাস্তি পায় এবং ভবিষ্যতে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা আর না ঘটে।