close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ছাত্রীকে বিয়ে করে শিক্ষকের ‘বাল্যবিবাহ কেলেঙ্কারি’: উত্তাল গৌরীপুরের বিদ্যালয় চত্বরে শিক্ষার্থীদের বি'ক্ষো'ভ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন এক সহকারী শিক্ষক। ঘটনায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আন্দোলন, প্রধান ফটকে তালা, এবং প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ — পরিস্থিতি উত্..

ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার এক স্কুলে ঘটে গেছে এমন এক ঘটনা, যা নাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় শিক্ষা ব্যবস্থা ও অভিভাবক সমাজকে। বালিজুরি গ্রামের ‘কবুলেন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের’ সহকারী শিক্ষক মো. আজিজুল হক নিজের বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করে ফেলেছেন।

এ বিয়ে নিয়ে স্থানীয়ভাবে উঠেছে নানা প্রশ্ন। বাল্যবিবাহ, শিক্ষকের অনৈতিক আচরণ, এবং শিক্ষার্থীর মানসিক চাপের অভিযোগ – সব মিলিয়ে এ ঘটনায় বিদ্যালয়জুড়ে শুরু হয়েছে চরম উত্তেজনা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৫ মে রাতে সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক ব্যক্তিগতভাবে ও পরিবারিক সম্মতিতে বিদ্যালয়ের এক দশম শ্রেণির ছাত্রী মাইমুনা আক্তারকে বিয়ে করেন।

বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসতেই ২৭ মে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা মানববন্ধন, স্লোগান এবং বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আজিজুল স্যার দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীটিকে মানসিকভাবে প্রভাবিত ও প্রলোভনে ফেলেছিলেন। অবশেষে তাকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন, যা শুধু অনৈতিক নয়, এটি সরাসরি বাল্যবিবাহের শামিল।”

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে যে, বিদ্যালয়ে বহিরাগত যুবকরা প্রায়ই প্রবেশ করে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে, অথচ কর্তৃপক্ষ থাকে নির্বিকার।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন এবং অন্যান্য শিক্ষকদেরও এক পর্যায়ে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা বেগম ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “শিক্ষক ও ছাত্রীর বিয়ের বিষয়টি আমরা পরদিন জেনেছি এবং বিষয়টি সম্পূর্ণ পারিবারিক। শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো তোলা হচ্ছে, বিশেষ করে বহিরাগত প্রবেশ বা উত্ত্যক্ত করার, সেগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

তবে শিক্ষার্থীরা তার বক্তব্য মানতে নারাজ। তাদের দাবি, প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং কর্তৃপক্ষ চোখ বন্ধ করে রেখেছে।

 

ঘটনার পরপরই গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম. সাজ্জাদুল হাসান বিদ্যালয়ে ছুটে যান। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন ও পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল হকের বেতন বন্ধ করা হয়েছে এবং তাকে সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।শেষ কথা

গৌরীপুরের এই ঘটনা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক ও বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষায় বড় প্রশ্ন তুলেছে। একজন শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে বিয়ে করা শুধু সামাজিকভাবে নয়, আইনগতভাবেও নৈতিকতা ও নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছে কিনা, তা নির্ধারণ করবে তদন্ত।

এই ঘটনা বাংলাদেশের গ্রামীণ শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকের ভূমিকাকে ঘিরে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে— যেখানে দায়িত্বের জায়গায় উঠে এসেছে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator