close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি নেতা বহিষ্কৃত, বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
চাঁদার জন্য ফ্যাক্টরি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি, ভাইরাল অডিও ক্লিপ আর শেষমেশ বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার—বিএনপি নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ। থাইল্যান্ড পালাতে গিয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের জালে ..

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত বিএনপি নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী অবশেষে ধরা পড়েছেন। চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগের মুখে থাকা এই নেতা থাইল্যান্ড পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি তার। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, তিনি ব্যাংককগামী একটি ফ্লাইট ধরতে এসেছিলেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকলেও নিরাপত্তা চৌকিতে পৌঁছানোর পরই তাকে আটক করা হয়।

রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী ফতুল্লা থানা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকা ও দলের আদর্শবিরোধী কাজ করার অভিযোগ ছিল। এ নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

তবে এই বহিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছে একটি বিস্ফোরক অডিও ক্লিপ। গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভয়েস রেকর্ডিং, যেখানে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে নারায়ণগঞ্জের এক পরিচিত শিল্পপতি আজাদ হোসেনকে প্রকাশ্যে হুমকি দিতে শোনা যায়। অডিওতে রিয়াদ বলেন, “চাঁদা না দিলে ফ্যাক্টরি পুড়ায়ে দিব।” এই হুমকি শুধু সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় না, বরং তা দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।

এ ঘটনায় শিল্পপতি আজাদ হোসেন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানা গেছে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন এবং প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।

অন্যদিকে বিএনপি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে বহিষ্কার করে দলের সব কার্যক্রম থেকে বিরত রাখে। তবে বহিষ্কারের পরেও তিনি থাইল্যান্ড পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে না পেরে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন।

রিয়াদকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নারায়ণগঞ্জে আনার প্রস্তুতি চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো খুবই গুরুতর এবং তদন্ত শুরু হয়েছে। তার হুমকির বিষয়টি নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ অন্যান্য আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে বিএনপির একটি অংশ বলছে, “এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত কেউই দলের আদর্শ বহন করে না। যারা দলকে কলুষিত করবে, তাদের বিরুদ্ধে দল কঠোর অবস্থানে থাকবে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনা শুধু দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেনি, বরং সাধারণ মানুষের মধ্যেও নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে। এই গ্রেপ্তার অনেক বড় একটি বার্তা—দলে থাকলেই কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

একজন স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী বলেন, “রিয়াদ আগে থেকেই নানা বিতর্কে ছিলেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উপর প্রভাব খাটানো, ক্ষমতার অপব্যবহার—এসব কারণে তার প্রতি অনেকের ক্ষোভ ছিল। অবশেষে তিনি ধরা পড়লেন।”

এই ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি নেতারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তারা স্বীকার করেছেন, “দল যে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা এখন প্রমাণিত।”

রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর গ্রেপ্তারের বিষয়টি দেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনীতি ব্যবহার করে যারা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে চান, তাদের জন্য এটি এক সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।



একটি ভয়েস ক্লিপই যেন পুরো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ধূলিসাৎ করে দিল এক নেতার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা এবং দলের কঠোর অবস্থান এটাই প্রমাণ করে—চাঁদাবাজি বা হুমকির রাজনীতি আর টিকবে না। জনসাধারণ ও গণতন্ত্র রক্ষায় এই ধরনের পদক্ষেপই প্রত্যাশিত।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator