close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

চাঁদা না পেয়ে বন্দুক উঠিয়ে প্রবাসীকে গুলি করার হুমকি বিএনপি নেতার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সৌদি প্রবাসী সোহরাব হোসেনকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে মারধর ও বন্দুক দিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। থানায় দায়ের করা অভিযোগে চারজনের নাম উল্লেখসহ অ..

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের একটি শান্তিপূর্ণ গ্রাম আমগাঁও—হঠাৎ করে গ্রামটি আতঙ্ক আর উত্তেজনায় থমকে দাঁড়িয়েছে। রবিবার (২২ জুন) দুপুরে এ গ্রামের সৌদি প্রবাসী সোহরাব হোসেনের ওপর ঘটে যায় এক লোমহর্ষক ঘটনা, যা এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে। অভিযোগ উঠেছে—স্থানীয় বিএনপির ৪ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি শাহজাহান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীকে মারধর করে এবং বন্দুক উঁচিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।

সোহরাব হোসেন সম্প্রতি প্রবাস থেকে ফিরে তার বাড়ির পাশের একটি পুকুর মাছ চাষের জন্য প্রস্তুত করেন। ঠিক সেই সময়েই স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা শাহজাহান ভূঁইয়া তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। প্রবাসী সোহরাব সরাসরি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

রবিবার দুপুরে শাহজাহান ভূঁইয়া, ফারজান করিম ওরফে সাজন, আলিফ ভূঁইয়া, আছমা আক্তার এবং আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি দলবলসহ সোহরাবের বাড়িতে গিয়ে তাকে প্রকাশ্যে মারধর করে। একপর্যায়ে শাহজাহান ভূঁইয়া তার হাতে থাকা বন্দুক সোহরাবের দিকে তাক করে গুলি করার হুমকি দেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা চিৎকার শুরু করলে হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যায় প্রবাসী সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অভিযুক্ত শাহজাহান ভূঁইয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি প্রথমে ফোন রিসিভ করে বলেন, “আমি এখন গাড়িতে আছি, পরে ফোন করুন।” পরে পুনরায় ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া মাসুম জানান, “ঘটনাটি শুনেছি। দলীয়ভাবে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, “অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকাবাসীর মতে, দীর্ঘদিন ধরে ওই বিএনপি নেতা এলাকায় দাপট দেখিয়ে চলেছেন। চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় অপরাধ কর্মকাণ্ড চালানো তার পুরোনো অভ্যাস। এবার সরাসরি একজন প্রবাসীকে লক্ষ্য করে অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দেওয়ায় পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে প্রবাসীর পরিবারে রয়েছে চরম নিরাপত্তাহীনতা।

এই ঘটনা শুধু একটি চাঁদাবাজির ঘটনা নয়—এটি স্থানীয় রাজনীতির বলয়ের একটি ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরে। একজন প্রবাসী, যিনি বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন, তাকে বন্দুকের মুখে ফেলতে দ্বিধা করেননি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা। এখন দেখার বিষয়—আইন কীভাবে এর প্রতিকার করে, এবং বিএনপি দলীয়ভাবে কী অবস্থান নেয়।

No comments found