close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বরিশালে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে রাতের অন্ধকারে হা'ম'লা: রংপুর ঘটনার প্র'তি'শো'ধ?..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ—আর ঠিক তার পরেই রাতের অন্ধকারে হামলা ও ভাঙচুর জাতীয় পার্টির বরিশাল কার্যালয়ে। রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন মোড় নিচ্ছে?..

বরিশালে জাতীয় পার্টির (জাপা) জেলা ও মহানগর শাখার অস্থায়ী কার্যালয়ে একদল যুবকের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (৩১ মে) দিবাগত গভীর রাতে নগরীর ব্যস্ত এলাকা ফকিরবাড়ি রোডে অবস্থিত দলটির কার্যালয়ে ঢুকে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী যুবকরা চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চুরমার করে দেয়। ভেঙে ফেলা হয় দলীয় ব্যানার, সাইনবোর্ড, এমনকি সংরক্ষিত নথিপত্র থাকার আলমারিও।

ঘটনার সময় কার্যালয়ে কেউ উপস্থিত ছিল না বলে জানা গেছে, তবে ঘটনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

হামলার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিশোধ?

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এ ঘটনার পেছনে রয়েছে একটি প্রতিশোধমূলক প্রেক্ষাপট।
রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলেই বিক্ষোভ মিছিল বের করে বরিশালের জাপা নেতাকর্মীরা। সদর রোডে মিছিল চলাকালে তাদের সঙ্গে দুর্বৃত্তদের সংঘর্ষ বাধে, যেখানে বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ধারণা করছেন, ওই সংঘর্ষের প্রতিশোধ নিতেই রাতের বেলায় কার্যালয়ে সংগঠিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “বিক্ষোভ শেষে আমরা যখন ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই, তখনই কিছু মুখোশধারী যুবক এসে কার্যালয়ে ঢুকে একের পর এক আসবাবপত্র ভাঙতে থাকে। খুব দ্রুত তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য

ঘটনার খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে কার্যালয়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত করছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “ঘটনাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। প্রাথমিকভাবে এটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা বলেই মনে হচ্ছে। জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রংপুর হামলার প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে?

এর আগে ২৯ মে রংপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে।
সেখানে দুর্বৃত্তরা তার বাসার সামনের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশের জাপা নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বরিশালের এই ঘটনা সেই উত্তেজনারই ধারাবাহিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে অনেকের চোখে। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের আক্রমণ রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন দিক নির্দেশ করছে, যা সামনে আরও বিস্তৃত হতে পারে যদি রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা এবং আইনের শাসন কার্যকরভাবে না প্রতিষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া

জাপার বরিশাল মহানগরের এক নেতা বলেন, “এই হামলা আমাদের ওপর সরাসরি এক ধরনের হুমকি। যারা মনে করছে আমরা চুপ করে থাকব, তারা ভুল ভাবছে। আমরা রাজনৈতিকভাবে এই ঘটনার জবাব দেব। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভয় পেয়ে এরা এসব করছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আইনের আশ্রয় নেব, তবে নেতাকর্মীদের মনোবল আরও দৃঢ় হয়েছে। কোনোভাবেই আমরা পিছু হটব না।”

বরিশালে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে রাতের অন্ধকারে হামলা দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতার আরও একটি নতুন অধ্যায় যোগ করল।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি না করা হলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সহিংসতা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়—আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব কিভাবে এই ঘটনার মোকাবিলা করে।

Walang nakitang komento