ভারতের গুজরাট রাজ্যে বিগত শনিবার (২৭ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া এক ‘বৃহৎ ধরপাকড় অভিযানে’ পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছে প্রায় ৬,৫০০ জন মানুষকে। গুজরাটের আহমেদাবাদ, সুরাট ও পরে পুরো রাজ্যজুড়ে চালানো হয় এই অভিযান, যার মধ্যে ৪৫০ জনের বাংলাদেশি পরিচয় কাগজপত্রে প্রমাণিত হলেও বাকি সকলকেই এখনও সন্দেহের ভিত্তিতে আটক রাখা হয়েছে।
সুরাটে বসবাসকারী সুলতান মল্লিক, যিনি পশ্চিমবঙ্গের বৈধ নাগরিক এবং তার নামেও রয়েছে ভারতীয় পাসপোর্ট ও জমির দলিল—তাকেও পুলিশ মাঝরাতে তুলে নিয়ে গেছে। তার স্ত্রীর চোখের সামনে স্বামী এবং ভাগ্নেদের ধরে নিয়ে গেলেও তিনদিনেও ফিরিয়ে আনা হয়নি।
একইভাবে, বিয়েবাড়ির বরযাত্রীদের পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে। গায়ে হলুদের দিন বাতিল করতে হয়েছে, ভেঙে পড়েছে পরিবার। এমনকি যারা গুজরাতেরই স্থায়ী বাসিন্দা এবং সব ধরনের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে, তারাও রেহাই পাননি।
আটক হওয়া অনেকেই গুজরাত ও অন্যান্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। 'পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ' নামক সংগঠন জানায়, এই অভিযান শুধু গুজরাটেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, মহারাষ্ট্রসহ নানা রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের 'বাংলাদেশি' তকমা দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। কোথাও মারধর, কোথাও পুলিশি হেফাজতে নেয়া—বাংলাভাষী মুসলিমদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতেই হচ্ছে বারবার।
বাংলাভাষী আর মুসলমান হলেই কি আজ সন্দেহভাজন? ভারতের নাগরিক হিসেবেও কি নিজের দেশে নিরাপদ নই?”—প্রশ্ন উঠছে মানবাধিকার সংগঠন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।