close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

বিএনপির নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করল আ.লীগ কর্মীরা

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আলোচনা সভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগ কর্মীরা। হামলার নেতৃত্বে ছিলেন তিন খুনের মামলার আসামি সুলতান মাহমুদ। গুরুতর আহত ..

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নে যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ভয়াবহ হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। গত সোমবার (১২ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পারপাড়া গ্রামের তেঁতুলতলা এলাকায় এই বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে।

এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ছাত্রদল ও যুবদলের অন্তত ছয়জন নেতাকর্মী, যাদের মধ্যে আছেন ভাটারা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল হাসান নাহিদ (২৫), যুবদল নেতা আলমগীর হোসেন (৪০), সোহেল রানা (৩৫), কবির হোসেন (৩০), গোলাম রব্বানী (৪০) এবং ছাত্রদল কর্মী জুয়েল রানা (২২)। আহতদের সবাই চর হরিপুর ও কালাইছাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং বর্তমানে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার বিবরণ

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার পর ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা পারপাড়া মোড়ে একটি সাংগঠনিক বৈঠক শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। বৈঠকে মূলত এলাকায় মাদককারবারি ও চাঁদাবাজদের তাণ্ডব ঠেকাতে কৌশলগত আলোচনা হয়। কিন্তু তারা যখন তেঁতুলতলা এলাকায় পৌঁছায়, তখন আওয়ামী লীগ নেতা ও তিনটি খুনের মামলার আসামি সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে একদল লোক তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলাকারীরা বাঁশের লাঠি, লোহার রড এবং জিআই পাইপ ব্যবহার করে বেধড়ক মারধর করে। আহতদের কাছ থেকে দুইটি মোটরসাইকেল ও দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা নেতাকর্মীদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

আহতদের বক্তব্য

আহত ছাত্রদল সভাপতি নাজমুল হাসান নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, “আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণার পর দলটির নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে চাপে পড়ে যায়। তারা এখন নিজেদের বাঁচাতে ইউনিয়ন বিএনপির একাংশের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে নতুন করে কোন্দল সৃষ্টি করছে। তাদের ইন্ধনেই আমাদের ওপর এই কাপুরুষোচিত হামলা চালানো হয়।”

তিনি আরও বলেন, “ভাটারা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলেও এখনো তারা এখানকার ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। তাদের মাধ্যমে বিএনপির একাংশ আমাদের ওপর শাসন চালানোর অপচেষ্টা করছে।”

বিভিন্ন পক্ষের প্রতিক্রিয়া

এ বিষয়ে ভাটারা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, “আমি ঘটনাটি আগে জানি না। খোঁজ নিয়ে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভাটারা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির খান বলেন, “ঘটনাটি রাজনৈতিক না, এটা সম্ভবত মাটি ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধ থেকে হয়েছে। তবে আমি যাচাই করে দেখব—রাজনৈতিক কোনো প্রেক্ষাপট আছে কি না। আর আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ একটি নিষিদ্ধ দল, তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”

আইনি অবস্থান

এদিকে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদ হাসান জানিয়েছেন, “আমাদের কাছে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


 

সরিষাবাড়ীর এই হামলার ঘটনা শুধু একটি isolated ঘটনা নয়, বরং বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি প্রতিচ্ছবি। সরকারের নিষিদ্ধ ঘোষণা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সক্রিয়তা এবং ছাত্রদল-যুবদলের ওপর হামলার ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রশাসন এখন যদি নিরপেক্ষ পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এ ধরনের হামলা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কা স্থানীয়দের।

Hiçbir yorum bulunamadı