পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা এখন দুই ভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সৃষ্ট উত্তেজনায় ফুটছে। সাম্প্রতিক বিএনপি ও জামায়াত কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দু'পক্ষই পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, বিএনপির পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে নাম এসেছে জামায়াতের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং জেলা শাখার আমির অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডলের।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার গতকাল সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিএনপির মামলায় মোট ৩২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যার মধ্যে জামায়াত নেতা আবু তালেব মণ্ডল অন্যতম। এছাড়াও, অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বাঁধন হাসান আলীম এই মামলাটি দায়ের করেন, যা স্থানীয় রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, জামায়াতের পক্ষ থেকেও পাল্টা মামলা করা হয়েছে। উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম কর্তৃক দায়ের করা সেই মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় দেড়শ থেকে ২০০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। জামায়াতের করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাহাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের আহ্বায়ক মক্কেল মৃধাকে। এই পাল্টাপাল্টি আইনি পদক্ষেপ দুই দলের মধ্যেকার দীর্ঘদিনের শীতল সম্পর্ককে প্রকাশ্যে সংঘাতের রূপ দিল।
আইনি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরপরই দুই পক্ষ রাজপথে নেমে এসেছে। জামায়াতের প্রার্থীকে প্রধান আসামি করার প্রতিবাদে গতকাল বিকেলে ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীরা। শহরের রেলগেট থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি আলহাজ্ব মোড়ে এসে শেষ হয়, যেখানে তারা অবিলম্বে প্রার্থীর নাম প্রত্যাহার ও মিথ্যা মামলা বাতিলের দাবি জানান। অন্যদিকে, সন্ধ্যা নামার পর উপজেলার সলিপুর ইউনিয়নের জয়নগর বোর্ডঘর মোড়ে বিএনপি কর্মিসভা শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তাদের প্রধান দাবি ছিল জামায়াত নেতা আবু তালেব মণ্ডলসহ মামলার সকল আসামির দ্রুত গ্রেপ্তার। এমন পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের জেরে এলাকায় উত্তেজনা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।



















