close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বিএনপি-এনসিপির পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। বিএনপি এবং নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির মধ্যে প্রতিদিনই চলছে তীব্র বাকযুদ্ধ। সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা, সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা এবং শেখ হাসিনার বিচারের দা..

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে বিএনপি এবং নবগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের কারণে এই উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুই দলের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল এবং মতাদর্শ নিয়ে প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

বিএনপি চায় যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, অন্যদিকে এনসিপির দাবি, আগে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এনসিপি নেতারা সরাসরি বলছেন, শেখ হাসিনার বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এনসিপির এই অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট তাড়াতে গিয়ে নিজেরাই যেন ফ্যাসিস্ট না হয়ে যাই।’’

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মতানৈক্য

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য না হলে দেশ আরও বড় সংকটে পড়তে পারে। ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা গেলেও নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট।

জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা দাবি করছেন, ‘‘শেখ হাসিনার শাসনামলে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে। সেই অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই সুষ্ঠু সংস্কার প্রয়োজন।’’ এই প্রসঙ্গে এনসিপির অন্যতম মুখপাত্র সারজিস আলম বলেন, ‘‘আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই, শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন নয়।’’

অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে দ্রুত নির্বাচনের দাবিকে সামনে রেখে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। বিএনপি মনে করে, নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশ আরও বেশি অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাবে। বিএনপির সিনিয়র নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘ইলেকশন পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেছে।’’

গণপরিষদ নির্বাচন বনাম জাতীয় নির্বাচন

এনসিপি বলছে, তাদের প্রস্তাবিত গণপরিষদ নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে আয়োজন করা সম্ভব। তবে বিএনপি মনে করছে, এটি আসলে নির্বাচনের সময় পেছানোরই একটি কৌশল। এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল আসলাম আদিব বলেন, ‘‘আমরা কখনোই নির্বাচন পেছানোর কথা বলিনি। বরং সংস্কার শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করাই আমাদের উদ্দেশ্য।’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মতবিরোধ যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্লেষক মোহাম্মদ আখতার হোসেন বাদল বলেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছানো উচিত। অন্যথায় দেশের অর্থনীতি এবং বিনিয়োগের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।’’

সামনের পথ কোনদিকে?

বর্তমান সরকার আগামী ডিসেম্বরকে ধরে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেছে। তবে বিএনপি এবং এনসিপির মতবিরোধের কারণে এই নির্বাচন কীভাবে এবং কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুসংহত সমঝোতা না হলে দেশের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চয়তার দিকে যেতে পারে।

সবমিলিয়ে বিএনপি এবং এনসিপির মধ্যে চলমান বাগযুদ্ধ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এখন দেখার বিষয়, দুই দল সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে কি না, নাকি এই মতবিরোধ আরও তীব্র হয়ে উঠবে।

Inga kommentarer hittades