close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু আজ—২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে পুষ্টির সুরক্ষা!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আজ সারা দেশে শুরু হচ্ছে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। এদিন ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি অপুষ্টিজনিত সমস..

সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন

আজ থেকে সারা দেশে শুরু হচ্ছে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। এ কর্মসূচির আওতায় ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সি ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘‘দেশে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগের হার একসময় ছিল ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেন। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরে দুবার ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে এই রোগের হার কমে শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশে নেমে এসেছে।’’

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ক্যাম্পেইনের আওতায়:

  • ৬-১১ মাস বয়সি ২৫ লাখ শিশুকে নীল রংয়ের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

  • ১২-৫৯ মাস বয়সি ১ কোটি ৯৫ লাখ শিশুকে লাল রংয়ের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং শিশু মৃত্যুর হার ২৪ শতাংশ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া হাম, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার মতো প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকিও কমে যায়।

দেশজুড়ে কর্মসূচির প্রস্তুতি

ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণও সম্পন্ন হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, ‘‘ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। লাল রংয়ের ক্যাপসুলের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত, আর নীল রংয়ের ক্যাপসুলের মেয়াদ ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।’’

শিশুদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিশুদের অবশ্যই ভরাপেটে কেন্দ্রে আনতে হবে। কাঁচি দিয়ে ক্যাপসুলের মুখ কেটে তরল ওষুধ খাওয়ানো হবে। তবে:

  • ৬ মাসের কম বয়সি শিশু,

  • ৫ বছরের বেশি বয়সি শিশু,

  • অসুস্থ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।

ঢাকা মহানগরে ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন ১,৮২৭টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ক্যাম্পেইন চলবে। অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতায় ৮ লাখ ৭১ হাজার ১৯ জন শিশুকে ১,৯০৫টি কেন্দ্রে ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘‘ক্যাম্পেইন সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’’

ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন দপ্তরের তত্ত্বাবধানে ৫ উপজেলা ও ১টি পৌরসভায় ৫১ লাখ ২ হাজার ৪৪৬ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সিভিল সার্জন ডা. এএফএম শাহাবুদ্দিন খান জানান, ‘‘এই কর্মসূচি শিশুদের সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’’

সারাদেশে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের তৎপরতা

ক্যাম্পেইন সফল করতে কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকে জেলা ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল বিতরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা ক্যাম্পেইন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছেন।

সচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকারের আহ্বান

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনগণকে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে অংশ নিতে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সবাইকে এ কর্মসূচিতে অংশ নিতে হবে।’’

এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ অপুষ্টি মুক্ত ভবিষ্যতের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।

Nessun commento trovato


News Card Generator