সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাজারে মূল্য ওঠানামার জের ধরে ভারত ও বাংলাদেশে সোনা ও রুপার দাম বড় ধসের মুখে পড়েছে। ভারতের একাধিক শহরে স্বর্ণ ও রুপার দাম এক ধাক্কায় কমে গেছে, যার প্রতিক্রিয়া পড়েছে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে। একই সময়ে বাংলাদেশেও স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাজুস।
রোববার (২৯ জুন) দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাইসহ ভারতের বড় বড় শহরগুলোতে স্বর্ণের দাম হঠাৎ কমে গেলে বাজারে সাড়া পড়ে যায়।
ভারতের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮ জানায়, দাম কমার খবর প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বিভিন্ন স্বর্ণের দোকানে কল করে দাম যাচাই করতে থাকেন।
বর্তমানে ভারতের বাজারে:
-
২২ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ১০ গ্রাম দাম: ₹৮৯,৩০০
-
২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রতি ১০ গ্রাম দাম: ₹৯৭,৪২০
-
রুপার প্রতি কেজি দাম: ₹১,০৭,৮০০
এছাড়াও ভারতের এমসিএএক্স (MCX) প্ল্যাটফর্মে সোনার দাম ১.৬১ শতাংশ হ্রাস পেয়ে প্রতি ১০ গ্রামে দাঁড়িয়েছে ₹৯৫,৫২৪।
রুপার দাম ১.৩৬ শতাংশ কমে প্রতি কেজিতে নেমে এসেছে ₹১,০৫,৩০০-এ।
উল্লেখ্য, এসব দামে তৈরির খরচ ও ৩% জিএসটি ধরা হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার শক্তিশালী হওয়া, সুদের হার ওঠানামা এবং বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা— এসব কারণে মূল্যবান ধাতুর প্রতি আকর্ষণ কিছুটা কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে ভারতীয় বাজারেও।
বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দামও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বেশ ওঠানামা করেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চীনের চাহিদা কমে যাওয়া এবং মার্কিন সুদের হার বিষয়ে অনিশ্চয়তা।
ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও স্বর্ণের দাম হ্রাসের ঘোষণা এসেছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণে ভরিতে ২,৬২৪ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করেছে।
নতুন দাম অনুযায়ী ২২ ক্যারেট স্বর্ণের এক ভরি দাম: ১,৭০,২৩৬ টাকা।
এই নতুন দাম রোববার (২৯ জুন) থেকেই কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে বাজুস।
শনিবার রাতে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানিয়েছে,স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমায় সামগ্রিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়ে বাংলাদেশে দাম কমানোর এই সিদ্ধান্ত এসেছে। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরে পাবে ভোক্তারা, বিশেষ করে যাদের বিয়ে, উৎসব বা বিনিয়োগের জন্য স্বর্ণ কেনার পরিকল্পনা ছিল।
দাম হ্রাসের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্বর্ণ দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে গেছে।
বিভিন্ন দোকানের মালিকরা জানাচ্ছেন,যারা আগে মূল্য বাড়ার আশঙ্কায় পিছিয়ে ছিলেন, তারাই এখন এসে দাম কমার সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।
ভারতেও একই অবস্থা। দাম কমার খবরে দোকানে ক্রেতাদের সারি, ফোনকলের বন্যা— অনেক দোকানে সামাল দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিশ্ববাজারের গতিপথ, স্থানীয় বাজারের মূল্য কাঠামো ও উৎসব মৌসুম— সবকিছু মিলিয়ে স্বর্ণের দামে এমন ওঠানামা চলতে পারে আরও কিছুদিন।
ক্রেতাদের উচিত, বাজার পর্যবেক্ষণ করে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাতে তারা লাভবান হতে



















