close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বেলুচিস্তানে ট্রেন যাত্রীদের জিম্মি করে রক্তক্ষয়ী হামলা, সেনা অভিযানে উদ্ধার ১০৪..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের জিম্মি করে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে উগ্রবাদীরা। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অভিযানে ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হলেও প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৬ জন উগ্রবা..

ট্রেন থামিয়ে গুলি ও বিস্ফোরণে আতঙ্ক, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার ১০৪

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। দেশটির সেনাবাহিনী রেলপথে জিম্মি হওয়া ১০৪ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছে এবং অন্তত ১৬ জন উগ্রবাদীকে হত্যা করেছে। তবে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ‘রেডিও পাকিস্তান’ জানিয়েছে, উদ্ধার করা হয়েছে ৮০ জনকে, আর নিহত হয়েছে ১১ জন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) উগ্রবাদীরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে দেয় এবং যাত্রীদের জিম্মি করে। নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA) হামলার দায় স্বীকার করেছে।

জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রেনটিতে ৪০০ জনের বেশি যাত্রী ছিল। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৫৮ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী এবং ১৫ জন শিশু রয়েছে। সেনাবাহিনী এখনো অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, কারণ অনেক যাত্রী এখনো নিখোঁজ।


জিম্মি মুক্ত করতে সেনাবাহিনীর অভিযান, পাহাড়ি পথে যুদ্ধ

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বলান জেলার দুর্গম এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের উদ্ধারে সচেষ্ট রয়েছে। কিন্তু কঠিন ভূ-প্রকৃতি ও সন্ত্রাসীদের গেরিলা কৌশল অভিযানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে জিও নিউজ জানিয়েছে, অভিযানের সময় উগ্রবাদীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

অভিযানের অংশ হিসেবে সেনাবাহিনী ট্রেনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে। জানা গেছে, হামলাকারীরা আফগানিস্তানে অবস্থানরত তাদের নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ রাখতে স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করছে। তারা নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, যা উদ্ধার অভিযানে জটিলতা সৃষ্টি করছে।


রেললাইন উড়িয়ে ট্রেন থামিয়ে আক্রমণ

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী জানিয়েছেন, হামলাটি খুব পরিকল্পিতভাবে চালানো হয়েছে। উগ্রবাদীরা প্রথমে রেলপথে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ট্রেন থামায় এবং তারপর চালকের দিকে গুলি ছোড়ে, এতে চালক আহত হন। ট্রেনটি একটি সুড়ঙ্গের সামনে থেমে যায়, যা হামলাকারীদের সুবিধা দেয়।

আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্তবর্তী এই দুর্গম এলাকায় উগ্রবাদীদের উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গুলি বিনিময়, উদ্ধার অভিযান চলমান

নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়ার পরপরই পাহাড়ি এলাকায় উগ্রবাদীদের সঙ্গে গুলি বিনিময় শুরু হয়। পাকিস্তানি সেনারা সতর্কতার সঙ্গে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি না হয়।

বেলুচিস্তানের সরকারি মুখপাত্র শহীদ রিন্দ জানিয়েছেন, জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়ার পরপরই সেনা অভিযান শুরু হয়। এই ট্রেনটি কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যাচ্ছিল এবং ৯টি বগিতে প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিল।

সন্ত্রাসীদের দমন ও যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর বিশেষ বাহিনীও অভিযানে যোগ দিয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি।


পাকিস্তানের রেলওয়ে নিরাপত্তায় বড় ধাক্কা?

বেলুচিস্তান অঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম নতুন নয়। বিশেষত BLA গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ট্রেন যাত্রীদের জিম্মি করার মতো ঘটনা দেশটির রেলওয়ে নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই ঘটনার পর পাকিস্তানজুড়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত আতঙ্ক পুরোপুরি কাটছে না। পাকিস্তান সরকার এই হামলার কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে।

এই রক্তক্ষয়ী ঘটনার শেষ কোথায়? বেলুচিস্তানের অস্থিতিশীলতা কি এবার আরও বাড়বে? বিশ্ববাসীর চোখ এখন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

Inga kommentarer hittades