close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘটে যাওয়া বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আজও বিচারিক প্রক্রিয়ায় নানা নাটকীয়তা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসছে। আদালতের অবস্থান নির্ধারণে যে ঘটনাপ্রবাহ ঘটেছে, তা বিচারিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে ধরছে।
আদালতের স্থান নিয়ে নাটক
প্রথমে ঘোষণা আসে যে কেরানীগঞ্জের অস্থায়ী আদালতে মামলার বিচার অনুষ্ঠিত হবে। কিছুক্ষণ পরেই জানা যায় যে আলিয়া মাদ্রাসায় আদালত বসবে। তবে আলিয়া মাদ্রাসায় পূর্বে নির্ধারিত চারটি তারিখেই কোনো বিচার অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর বলা হয় যে আদালত মেট্রোপলিটন জজ কোর্টে বসবে, যেখানে গত কয়েকদিন ধরে মামলা স্থগিত ছিল।
এ ধরনের বারংবার স্থান পরিবর্তন এবং আদালতের অবস্থান নিয়ে অনিশ্চয়তা বিচার প্রার্থীদের জন্য ভীষণ বিভ্রান্তিকর এবং হতাশাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিচারে অবিচার এবং ভুল রায়ের শিকার
প্রশ্ন উঠছে, ২০০৯ সালের ঘটনার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়াটি কতটা সুষ্ঠু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, অনেক নিরপরাধ ব্যক্তি এই বিদ্রোহের ঘটনায় ভুলভাবে অভিযুক্ত হয়েছেন। তাদেরকে বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং ভুল রায়ের কারণে তারা দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দী রয়েছেন।
তদন্ত কমিশন গঠন এবং হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে এই বিচার প্রক্রিয়ার অনেক ত্রুটি বেরিয়ে এসেছে। বিশেষ করে, এক এফআইআর থেকে দুটি আলাদা চার্জশিট তৈরি করা এবং মামলার আলাদা বিচারিক প্রক্রিয়া চালানোর বিষয়টি গুরুতর অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
বিকল্প সমাধানের দাবী
বিচারিক অনিয়মের শিকার নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী দণ্ড মওকুফ বা দণ্ড স্থগিত করা।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলা প্রত্যাহার করা।
যেখানে খালেদা জিয়ার মতো ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৪০১ ধারা ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে এই নিরপরাধ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য হতে পারে।
মানবাধিকার লঙ্ঘন
প্রতিবেদনটি তুলে ধরেছে যে, ১৬-১৭ বছর ধরে যারা কারাগারে রয়েছেন, তাদের জীবন অত্যন্ত মানবেতর। কারাগারের ভিতরে অনেকেই চিকিৎসার অভাবে বা পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাবে মারা গেছেন। অনেক নিরপরাধ ব্যক্তি শুধু সাক্ষ্য না দেওয়ার কারণে বা বিদ্রোহের সময় অন্যত্র অবস্থান করার পরও জোরপূর্বক গ্রেপ্তার ও অভিযুক্ত হয়েছেন।
বিচারিক প্রক্রিয়ার এমন নাটকীয়তা এবং অনিয়ম দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করছে। এখন সময় এসেছে নিরপরাধ ব্যক্তিদের জন্য সঠিক বিচার নিশ্চিত করার এবং দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অবিচারের অবসান ঘটানোর।
Nema komentara