close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

আরও বড় হচ্ছে তুরস্কের বিক্ষোভ: উত্তাল রাজপথ, আটক ১৪০০ জনের বেশি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে তুরস্কে বিক্ষোভ চলছে টানা আটদিন ধরে। হাজারো মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে। ইতোমধ্যে ১,৪০০ জনের বেশি আটক হয়েছে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়..

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গ্রেপ্তার হওয়া মেয়র একরেম ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ আরও তীব্র রূপ নিয়েছে। গতকাল বুধবার টানা অষ্টম রাতেও হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে আন্দোলন চালিয়ে গেছে। আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না।

বিক্ষোভ দমনে পুলিশের কড়া পদক্ষেপের ফলে ইতিমধ্যেই শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ ১,৪০০ জনের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে বলেছেন, "দেশে যারা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের কোনো জায়গা হবে না।"

বিক্ষোভের সূচনা

গত বুধবার ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হলে তার সমর্থকরা রাজপথে নেমে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করে। ইমামোগলুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে, যা তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের দমন-পীড়নের কঠোর সমালোচনা করেছে।

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এক ইফতার মাহফিলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, "দেশ এখন একটি সংকটময় সময় পার করছে। জনগণকে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "যারা দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তারা করুণ পরিণতির সম্মুখীন হবে।"

শিক্ষার্থীদের জোরালো প্রতিবাদ

বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইস্তাম্বুলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শিক্ষার্থীরা সরকার পতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নিয়েছে। তারা পতাকা ও ব্যানারে এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যাতে সহিংস রূপ না নেয়, সেজন্য ইস্তাম্বুলজুড়ে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে, পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবুও প্রতিবাদ থামেনি। অনেক শিক্ষার্থী মুখে মাস্ক পরে পুলিশের নজর এড়িয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।

বিরোধী দলের ভূমিকা

তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) গতকাল ইস্তাম্বুলের সিটি হলের সামনে বিক্ষোভ করেছে। দলটি আগামী শনিবার বড়সড় মিছিলের পরিকল্পনা করছে। এছাড়া আঙ্কারা, ইস্তাম্বুলসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সারা সপ্তাহজুড়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে।

সরকারের কঠোর বার্তা

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলি ইয়ারলিকায়া এক বিবৃতিতে জানান, গত বুধবার থেকে ‘বেআইনি’ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে ১,৪১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, "যারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা করবে, তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। আমাদের জাতীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের ওপর আঘাত বরদাশত করা হবে না।"

সরকারের এই কঠোর অবস্থানের পরও আন্দোলন থামছে না, বরং বিক্ষোভ আরও বড় আকার নিচ্ছে। ইস্তাম্বুলের রাজপথে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, যতক্ষণ না মেয়র ইমামোগলুকে মুক্তি দেওয়া হয়, ততক্ষণ তারা রাজপথ ছাড়বেন না।

Geen reacties gevonden