রাজধানীর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের দুর্ভোগ অব্যাহত। গত এক সপ্তাহে আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় পৌঁছেছে। মাসখানেক আগেও এই আলু বিক্রি হচ্ছিল ৬০ টাকায়। একই সঙ্গে বাড়তি দেখা গেছে কিছু সবজির দাম। তবে ডিম ও মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকায় ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন।
আলুর দাম বৃদ্ধি অব্যাহত
রামপুরা বাজারের বিক্রেতা রহিম মিয়া জানান, এক সপ্তাহ আগে আলু ছিল ৭০ টাকা, যা দুই ধাপে বাড়তে বাড়তে এখন ৮০ টাকায় ঠেকেছে। পাইকারি বাজারে বর্তমানে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায়। কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আলুর মৌসুমের শেষ পর্যায়ে দাম বাড়ার প্রবণতা থাকলেও এবার সারা বছরই আলুর বাজার ছিল চড়া।
আড়তদার সাইফুল রহমান জানান, অতিবৃষ্টি ও ঢলে আলুর উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হিমাগারগুলোতে সংকট দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে ভারত থেকে আমদানি করা আলু বাজারে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এই আলুকে দেশি নতুন আলু বলে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।
সবজির দামও বাড়তি
কিছু সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। টমেটো ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। বরবটি, করলা ও শিমের মতো সবজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পটল, পেঁপে ও ঢ্যাঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। শীতের সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় কিছু সবজির দাম কমেছে। বেগুন ৭০ থেকে নেমে ৬০ টাকায় এবং কুমড়ো ৮০ থেকে কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মসলা পণ্যের দাম বাড়তি
পেঁয়াজের বাজারেও উত্তাপ। দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আদা ও রসুনের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
মাছের বাজার ক্রেতাদের নাগালের বাইরে
মাছের বাজারে এখনো দাম চড়া। চাষের কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়, পাঙাশ ২০০ টাকায় এবং তেলাপিয়া ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিং, ট্যাংরা, চিংড়ি ও বোয়ালের মতো মাছের দাম ৪৫০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে।
গরু ও মুরগির দাম স্থিতিশীল
মুরগির বাজারে ব্রয়লার কেজি ১৯০ টাকায় এবং দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজি ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকায় স্থির রয়েছে।
ক্রেতাদের হতাশা, বিক্রেতাদের ব্যাখ্যা
মহাখালী বাজারের ক্রেতা শহীদুজ্জামান মীর বলেন, মাছের দাম এত বেশি যে ক্রেতারা কমদামি মাছ ছাড়া কিছুই কিনতে পারছেন না। মগবাজারের মোজাম্মেল হক বলেন, বাজারে মনিটরিংয়ের অভাবে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম চাইছেন।
শান্তিনগর বাজারের মাছ বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম জানান, মাছের ফিডের দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, যা মাছের দামে প্রভাব ফেলেছে। পাইকারি বাজার থেকে কম দামে মাছ কিনতে পারলে খুচরা বাজারেও দাম কমানো সম্ভব বলে তিনি মতামত দেন।
বাজারের এই চিত্র সাধারণ ক্রেতাদের জন্য চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বাজার মনিটরিং বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
Geen reacties gevonden