আমার আব্বু কোথায়?’—পারভেজ কন্যার প্রশ্নে কাঁদলেন তারেক রহমান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
১১ বছর ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা পারভেজ হোসেনের ছোট্ট মেয়ের এক প্রশ্ন—"আমার আব্বু কোথায়?—সারা অনুষ্ঠানকে স্তব্ধ করে দেয়। লন্ডনে আয়োজিত স্মরণানুষ্ঠানে শিশুটির আকুতি শুনে আবেগে ভেঙে পড়েন বিএনপি নেতা ত..

আমার আব্বুকে গুম করা হয়েছে। আমি শুধু জানতে চাই—আমার আব্বু কোথায়? তিনি কি বেঁচে আছেন? আমি শুধু তার গলার শব্দটা আবার শুনতে চাই।
এই কথাগুলো যখন একজন ছোট্ট মেয়ের কণ্ঠে ফুটে উঠলো, তখন ভার্চুয়াল স্মরণানুষ্ঠানটি আর শুধুমাত্র একটি সভা ছিল না—তা রূপ নিয়েছিল এক বিবেকের আদালতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। শিশুটির কান্না তাকে এতটাই নাড়া দেয় যে, তিনি নিজের চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি, কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে, তার গাল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে।

ঘটনাটি ঘটে লন্ডনে, গত ১ জুলাই, জাতীয় নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত এক ভার্চুয়াল স্মরণানুষ্ঠানে।
এই অনুষ্ঠানে গুম হওয়া বিএনপি নেতা পারভেজ হোসেনের পরিবার, বিশেষ করে তার ছোট্ট মেয়ে অংশ নেয়। মেয়েটির আবেগভরা কথায় ভেঙে পড়ে পুরো অনুষ্ঠান। কেউ কথা বলতে পারছিল না, কেউ চোখের পানি লুকাতে পারছিল না।

তারেক রহমান কাঁদতে কাঁদতে বলেন—

একজন ছোট্ট শিশু তার বাবার সন্ধান চাইছে—এটি কোনো রাজনীতির প্রশ্ন নয়, এটি পুরো জাতির বিবেকের প্রশ্ন। গুম কৌশল নয়, এটি একটি ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধ। যারা এই অন্যায় করেছে, একদিন তাদের জবাব দিতেই হবে। বাংলাদেশে গুম-নিখোঁজের যে অমানবিক চিত্র আমরা দেখছি, এটি কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কল্পনাও করা যায় না। আন্তর্জাতিক মহলের উচিত, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ঘটানো।

বিএনপি’র নেতা পারভেজ হোসেন ২০১৩ সালের এক সন্ধ্যায় ঢাকার একটি এলাকা থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের ভাষ্যমতে, তাকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। এরপর গত ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি। জীবিত না মৃত—এমন প্রশ্নই আজ তার মেয়ের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে।

গুমের শিকার পরিবারের কষ্ট কেবল ব্যক্তি পর্যায়ের নয়, এটি একটি জাতির নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতীক।
এই ধরনের নিখোঁজ ঘটনা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনই নয়, বরং একটি জাতিকে ভয় আর অবিশ্বাসে আবদ্ধ করে রাখে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুম-নিখোঁজ নেতাকর্মীদের পরিবার, মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এই গুমের বিচার শুধু জাতীয় নয়, এটি আন্তর্জাতিক আদালতেও গড়াতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনাগুলো যেন আন্তর্জাতিক মহলের সামনে উপস্থাপন করা হয়।

আমরা চাই না আর কোনো শিশু তার বাবার গলা খুঁজে ফিরুক। গুম বন্ধ করতে হলে রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলকে একসাথে পদক্ষেপ নিতে হবে।

তারেক রহমান অনুষ্ঠানে গুম হওয়া প্রতিটি ব্যক্তির পরিবারের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে এই অন্যায়ের বিচার হবেই—ইনশাআল্লাহ। পারভেজ হোসেনসহ সব নিখোঁজদের পরিবার একদিন ন্যায়বিচার পাবে। এটা আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার।

আমার আব্বু কোথায়?"—এই একটি প্রশ্ন যেন হাজারো নিখোঁজ মানুষের পরিবারের মুখপাত্র হয়ে উঠেছে।

এই প্রশ্ন শুধু কান্না নয়, এটি একটি জাতির সামনে দাঁড় করানো এক বিবেকের আয়না।
আজ সময় এসেছে, গুম-নিখোঁজের এই ভয়ংকর অধ্যায় থেকে দেশকে মুক্ত করার।
আর একদিন, ইনশাআল্লাহ, ইতিহাস বিচার করবে।

کوئی تبصرہ نہیں ملا