আইনি ঝড় মিঠুনের জীবনে: মালাডে বেআইনি নির্মাণে জড়িত থাকার অভিযোগে বাড়ি ভাঙার মুখে বলিউড অভিনেতা!
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ও রাজনৈতিকভাবে সরব ব্যক্তিত্ব মিঠুন চক্রবর্তী ফের একবার আইনি জটিলতায় জড়ালেন। এবার অভিযোগ আরও গুরুতর—মুম্বাইয়ের মালাড এলাকায় মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের অনুমতি ছাড়াই একটি বহুতলের নিচতলায় অবৈধ নির্মাণ করেছেন তিনি। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে ইতোমধ্যেই শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে বৃহন্মুম্বই পৌরনিগম (BMC)।
পৌরনিগমের অভিযোগ অনুযায়ী, ইরাঙ্গেল গ্রামের হীরাদেবী মন্দিরের কাছাকাছি একটি ভবনের নিচতলায় কাঠ, ইট ও কাচ ব্যবহার করে যে নির্মাণকাজটি করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। নির্মাণের জন্য কোনওরকম অনুমতি নেওয়া হয়নি। সেই কারণেই মিঠুনের নামে অভিযোগ তুলে পাঠানো হয়েছে আইনসংগত নোটিশ। পৌরসংস্থা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—এক সপ্তাহের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলা, জরিমানা করা, এমনকি কারাদণ্ডও।
কী বলছে পৌরনিগম?
বৃহন্মুম্বই পৌরনিগম সূত্রে খবর, শুধু মিঠুন নন, মালাড এলাকার আরও প্রায় ১০০টি নির্মাণকে বেআইনি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল বাংলো ও বহুতল ভবন। তবে মিঠুন চক্রবর্তীর নাম যুক্ত হওয়ায় বিষয়টি আলাদাভাবে গণমাধ্যমের নজরে এসেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পৌরনিগমের কোনওরকম অনুমোদন ছাড়াই ওই ভবনের একটি অংশ পুনর্গঠন বা সংস্কার করেছেন।
তবে, মিঠুন চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “কোনও বেআইনি নির্মাণ হয়নি। অনেকেই এই ধরনের নোটিশ পেয়েছেন। আইন মেনে আমরা উত্তর দেবো।” যদিও তার মন্তব্যে আশ্বস্ত না পৌরনিগম। তারা জানিয়ে দিয়েছে, যদি জবাব সন্তোষজনক না হয় বা সময়মতো না আসে, তবে অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলার পাশাপাশি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পূর্বের বিতর্কেও নাম জড়িয়েছে মিঠুনের
এটাই প্রথম নয়, এর আগেও আইনত সমস্যায় জড়িয়েছেন মিঠুন। গত বছর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতা অমিত শাহের সফরের সময় মঞ্চে তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল প্রবল বিতর্ক। অনেকেই তার বক্তব্যকে “উসকানিমূলক” বলে অভিহিত করেন, এবং তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবিও উঠেছিল।
এই প্রেক্ষাপটে মালাডের বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ নতুন করে মিঠুনের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। যদিও তিনি দাবি করছেন, কোনও বেআইনি কিছু করেননি, তবে বাস্তবতা হলো—মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের আইন খুবই স্পষ্ট এবং কঠোর। অনুমতি ছাড়া কোনও নির্মাণই বৈধ নয়। এখন দেখার বিষয়, মিঠুন চক্রবর্তী তার জবাবে পৌরনিগমকে কতটা সন্তুষ্ট করতে পারেন এবং ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
শেষ কথা
একটি সময়ের সুপারস্টার, বর্তমানে রাজনীতিতেও সক্রিয় মিঠুন চক্রবর্তীর এই আইনি বিপর্যয় শুধু তার ভক্তদের নয়, বলিউড ও রাজনৈতিক মহলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী কয়েক দিনেই পরিষ্কার হবে—এই সংকট কতদূর গড়ায়। তার বাসভবন কি সত্যিই ভেঙে ফেলা হবে? নাকি আইনত লড়াইয়ে জিতে যাবেন মিঠুন?
আপনার মতামত কী? মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ কি ন্যায্য? মতামত জানান কমেন্টে।