close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

আধাঘণ্টা ধরে বাংলাদেশের আকাশে ভারতীয় ড্রোন, বড়াইবাড়ী সীমান্তে তীব্র আ'ত'ঙ্ক..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রৌমারীর বড়াইবাড়ী সীমান্তে ফের দেখা গেল ভারতীয় ড্রোনের উড়ান। একসঙ্গে চারটি ড্রোন বাংলাদেশের ৫০০ মিটার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে আধাঘণ্টা চক্কর দিলে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র আতঙ্ক। বিজিবি নিশ্চিত করল..

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ঐতিহাসিক বড়াইবাড়ী সীমান্তে ফের উড়তে দেখা গেছে ভারতীয় ড্রোন। শুক্রবার (৩০ মে) রাত ৮টার দিকে সীমান্তের আন্তর্জাতিক পিলার ১০৬৭ (১ এস)-এর কাছে বাংলাদেশের প্রায় ৫০০ মিটার অভ্যন্তরে অন্তত চারটি ড্রোন একযোগে প্রবেশ করে এবং দীর্ঘ সময় আকাশে চক্কর দেয়।

স্থানীয়রা জানান, ভারতের আসাম রাজ্যের কাকড়িপাড়া বিএসএফ ক্যাম্প থেকে পরিচালিত হয় এই ড্রোন কার্যক্রম। বড়াইবাড়ী ও বারবান্দা গ্রামের ওপর দিয়ে এসব ড্রোন প্রায় আধাঘণ্টা ঘুরে বেড়ায়।

সীমান্তের দায়িত্বে থাকা জামালপুর ৩৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে বিজিবি থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

বিএসএফের সন্দেহজনক তৎপরতা

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগেও, মাত্র কয়েকদিন আগে ২৭ মে একই সীমান্ত দিয়ে ভারতের ১৪ জন নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছিল বিএসএফ। তখনও ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হয়েছিল। এই ধারাবাহিক কার্যক্রমে সীমান্তবাসীদের মাঝে ভয় ও উদ্বেগ বাড়ছে।

রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া বলেন, “২৭ মে যে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়, তার পর থেকেই সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে ভারত। শুক্রবার রাতেও আমি নিজে ড্রোন উড়তে দেখেছি, ড্রোনগুলো বিজিবি ক্যাম্পের কাছাকাছিও চলে এসেছিল।”

বিএসএফ দায় এড়াচ্ছে, সন্দেহ ঘনীভূত

বিজিবি সূত্র জানায়, ওই ড্রোনগুলো রাত সোয়া ৮টা থেকে প্রায় পৌনে ৯টা পর্যন্ত সীমান্ত পিলার ১০৬৭ (১ এস)-এর কাছে চক্কর দিতে থাকে। যোগাযোগ করা হলে বিএসএফ এ ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। তবে বিজিবির কর্মকর্তারা বলছেন, সীমান্ত এলাকায় সাধারণ নাগরিকের পক্ষে এতটা গভীরে ড্রোন পরিচালনা করা অসম্ভব। বিএসএফের অনুমোদন ও সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া এ ধরনের নজরদারি সম্ভব নয়।

আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, “কোনো বৈধ অনুমতি ছাড়া এক রাষ্ট্রের ড্রোন অন্য রাষ্ট্রের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। ভারত যে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের আকাশসীমায় ড্রোন ওড়াচ্ছে, তা দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং জাতিসংঘের গাইডলাইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সরকার চাইলে কূটনৈতিক পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে বিষয়টি কঠোরভাবে তুলতে পারে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে প্রমাণসহ প্রতিবাদ জানানো উচিত।”

সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ-ভয় বাড়ছে

বারবার এই ড্রোন প্রবেশের ঘটনায় সীমান্তবর্তী গ্রামের সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারা মনে করছে, ভারত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশের ভেতরে নজরদারি চালাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে এর সঠিক প্রতিকার না হলে ভবিষ্যতে এর পরিণতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।

স্থানীয়দের দাবি, শুধু কূটনৈতিক প্রতিবাদ নয়—সরকারকে মাঠপর্যায়ে প্রস্তুতি নিতে হবে যাতে সীমান্তে সুরক্ষা নিশ্চিত থাকে এবং জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।

Không có bình luận nào được tìm thấy