বাংলাদেশ সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এক যুগান্তকারী ঘোষণায় জানিয়েছেন যে, দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী শহীদ শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে সম্পন্ন করা হবে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আইন উপদেষ্টা তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হ্যান্ডেলে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তার এই ঘোষণার পর বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার এক নতুন আশার আলো দেখছে সাধারণ মানুষ। আসিফ নজরুল তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, প্রচলিত দীর্ঘমেয়াদী বিচারিক জটিলতা এড়িয়ে এই স্পর্শকাতর মামলাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-এর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে। এই আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী, পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন বা চার্জশিট আদালতে পেশ করার পর থেকে পরবর্তী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যেই মামলার রায় ঘোষণা করতে হবে। এটি সরকারের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শহীদ হাদির পরিবারের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল যেন খুনিরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে। ড. আসিফ নজরুলের এই আশ্বাসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ওপরও এক ধরনের ইতিবাচক চাপ তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা হচ্ছিল। সংগঠনের পক্ষ থেকে শাহবাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, তারা কোনো ধরনের লোকদেখানো বিচার বা বিচারবহির্ভূত ব্যবস্থা চান না। আব্দুল্লাহ আল জাবেরের নেতৃত্বে ইনকিলাব মঞ্চ দাবি করেছে যে, আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত নিশ্চিত করে যেন দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয়। সরকারের এই দ্রুত বিচারের সিদ্ধান্তকে তারা স্বাগত জানালেও কার্যক্রমের স্বচ্ছতা বজায় রাখার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। সামগ্রিকভাবে, ৯০ দিনের এই সময়সীমা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে একটি বড় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।



















