close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

৬৯ বছরের অধ্যাপক আনোয়ারার কারাবাসে ক্ষু'ব্ধ মানবাধিকার সংগঠন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক পিএসসি সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় ক্ষোভ ঝাড়ল হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ। সংগঠনটি বলেছে, বাছবিচারহীনভাবে গ্রেপ্তার বিচারপ্রক্রিয়াকে প্..

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এস এম আনোয়ারা বেগমকে হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)। রবিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, ৬৯ বছর বয়সী একজন নারী, যিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন এবং দীর্ঘদিন সরকারি দায়িত্বে ছিলেন—তাঁকে এভাবে জেল পাঠানো “আইনি প্রক্রিয়ার মানবিক দিক উপেক্ষারই বহিঃপ্রকাশ”।

ঘটনার পটভূমি ও মামলা প্রসঙ্গ

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর রায়সাহেব বাজার এলাকায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে’ গুলিবিদ্ধ হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা সুজন মোল্লা। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে ২০২৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমকে অভিযুক্ত করে সূত্রাপুর থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।

পুলিশ মামলার তদন্তে তাঁর সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর শিক্ষার্থীরা তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশও তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখায়। গত বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হলে, বিচারক তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এইচআরএফবির যুক্তি ও আইনি প্রেক্ষাপট

এইচআরএফবি তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করে, অধ্যাপক আনোয়ারা একজন প্রবীণ নারী এবং মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করার পাশাপাশি সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সংগঠনটি মনে করে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী, নারী ও বয়স্কদের জামিনপ্রাপ্তির বিষয়টি আদালতের বিবেচনায় থাকা উচিত ছিল।

এইচআরএফবি আরও বলেছে, “এ ধরনের একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো একটি দুঃখজনক নজির হয়ে রইল।”

বিচারপ্রক্রিয়ায় পক্ষপাতের শঙ্কা

সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানকে ঘিরে সংঘটিত প্রতিটি ঘটনার ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষ তদন্ত চায় তারা। কিন্তু বর্তমানে মামলার নাম করে যেভাবে নির্বিচারে শত শত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানো হচ্ছে, তাতে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এতে মামলাগুলোর গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

এইচআরএফবি বলে, “যে কোনো অভিযোগ প্রমাণের জন্য নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রয়োজন। শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা পূর্বধারণা থেকে আসামি নির্ধারণ করলে তা বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট করতে পারে।”

আদালত ও পুলিশের প্রতি আহ্বান

সংগঠনটি পুলিশ ও বিচার বিভাগের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমসহ সকল অভিযুক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার ও বিচার কার্যক্রমে যেন যথাযথ যাচাই-বাছাই এবং মানবিক দিক বিবেচনা করা হয়।” তারা মনে করে, বিশেষ করে স্পর্শকাতর মামলায় অনিয়ম বা পক্ষপাতিত্ব বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলতে পারে।

বিবৃতির শেষে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ পুনরায় আশাবাদ ব্যক্ত করে যে, দেশের বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষতা ও মানবাধিকারের মৌলিক নীতিগুলোকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কাজ করবে। অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের মতো একজন মুক্তিযোদ্ধা ও বর্ষীয়ান নারীকে বিনা প্রমাণে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ—এবং যথাযথ বিচার নিশ্চিতে দ্রুত পদক্ষেপ চায়।

Nenhum comentário encontrado