close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

৩ মাস ‘নিখোঁজ’ ছিলেন কোথায়? ঢাকায় নয়, ভাইয়ের বাড়িতেই গোপন ছিলেন মমতাজ!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কণ্ঠশিল্পী ও সাবেক এমপি মমতাজ বেগমকে নিয়ে রহস্যভেদের পর বিস্ময়—তিনি ছিলেন না ঢাকায় বা বিদেশে, বরং নিজ ভাইয়ের সিংগাইরের বাড়িতেই আত্মগোপনে! ভাই এবারত হোসেন জানালেন চমকে দেওয়া সব তথ্য।..

গোপন এক অধ্যায়: ভাইয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন মমতাজ বেগম

দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে নিয়ে চলছিল গুঞ্জন, আলোচনা এবং রহস্যের জাল। কোথায় আছেন তিনি, কী করছেন—তা ছিল অনেকের কাছেই অজানা। কেউ কেউ বলেছিলেন তিনি দেশের বাইরে, কেউ বলেছেন চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন গোপনে। কিন্তু এবার সেই রহস্যের জট খুললেন তারই আপন ভাই এবারত হোসেন।

দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এবারত জানিয়েছেন, গেল বছর ৫ আগস্টের পর থেকে টানা তিন মাস মমতাজ ছিলেন তার সিংগাইরের চরদুর্গাপুরে নিজ বাড়িতে। এই পুরো সময়টিতে তিনি একবারের জন্যও বাড়ির বাইরে যাননি। এমনকি পাশের বাড়ির মানুষজন পর্যন্ত বুঝতেই পারেননি যে, দেশের একজন তারকা শিল্পী তাদের পাশেই অবস্থান করছেন।

পুরো এলাকা ছিল নজরদারির আওতায়
এবারত বলেন, “আমার স্ত্রী ও সন্তান ছাড়া আর কেউ জানতো না যে আপা আমার বাড়িতেই আছেন। আমি আপার অনুরোধে কাউকে কিছু বলিনি। বাড়ির বাইরে কোনো আগন্তুক আসলে আমরা বলে দিতাম—বাড়িতে কেউ নেই।”

তিনি আরও বলেন, “বাড়ির চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ছিল। কেউ ঢুকলেই তা মনিটরে দেখা যেত। কোনোভাবেই যেন তার অবস্থান ফাঁস না হয়, সে বিষয়ে আমরা ছিলাম শতভাগ সতর্ক।”

এই তিন মাসে মমতাজ কোনো রাজনৈতিক নেতা, কর্মী বা শুভাকাঙ্ক্ষীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেননি। তার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিলেন ভাই এবারত। কারও কিছু প্রয়োজন হলে তার মাধ্যমেই তা মমতাজের কাছে পৌঁছাতো।

গোপনে ঢাকায় যাত্রা
পরিকল্পনা অনুযায়ী, এক মধ্যরাতে বোরকা পরে বাড়ি ছাড়েন মমতাজ। গাড়ির জানালা ছিল কালো রঙের গ্লাসে আবৃত, যেন কেউ তাকে চিনতে না পারে। সোজা ঢাকার ধানমন্ডিতে এক ভাড়া বাসায় গিয়ে ওঠেন তিনি। এই বাসাটিও ভাড়া নেওয়া হয়েছিল তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নিপার নামে। নিপার স্বামী প্রবাসে থাকেন, ফলে সেই বাসায় মমতাজ নির্বিঘ্নে থাকতে পেরেছেন।

এ সময় মমতাজের দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব পালন করেন নিপা। আর আর্থিক সহযোগিতা আসত তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) জুয়েলের কাছ থেকে।

আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে দিনযাপন
স্থানীয় সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চোখ ফাঁকি দিয়ে মমতাজ যথেষ্ট আরামে ও নিরাপদে ভাইয়ের বাড়িতে সময় কাটিয়েছেন। তার এই গোপন অবস্থান এবং ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত।

প্রসঙ্গত, মমতাজ বেগম বর্তমানে একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৪ দিনের রিমান্ডে আছেন। এই রিমান্ডের মধ্যে তার বিরুদ্ধে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মমতাজের আত্মগোপনের বিষয়টি তদন্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

উঠছে নানা প্রশ্ন
তিন মাস গোপনে থাকার কারণ কী? কাদের ভয়ে আত্মগোপন করেছিলেন তিনি? বিষয়টি রাজনৈতিক, পারিবারিক নাকি অন্য কোনো জটিলতা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্ত সংস্থাগুলো।

এখন সবার নজর তদন্তের দিকে। মমতাজ কী বলবেন, কী তথ্য দেবেন—তা নিয়েই আলোচনা তুঙ্গে।


এই ঘটনার পর দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। একজন জনপ্রিয় শিল্পী এবং সাবেক এমপি কীভাবে এতদিন আত্মগোপনে থাকলেন—সেটি এখন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মিডিয়া এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও মূল আলোচ্য বিষয়।

Keine Kommentare gefunden