close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

২ হাজার ৩৬৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত ভারত : জয়সোয়াল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতে আটক দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের ভাগ্য ঝুলে আছে শুধু একটাই কারণে—বাংলাদেশ সরকার এখনো তাদের জাতীয়তা নিশ্চিত করেনি। জয়সোয়ালের স্পষ্ট বার্তা: চিহ্নিত করলেই ফেরত পাঠানো হবে। প্রশ্ন উঠছে—কারা ..

দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত ভারত, অপেক্ষায় শুধু ঢাকার সম্মতির

ভারতে অবস্থানরত দুই হাজার ৩৬৯ জন অবৈধ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছে ভারত সরকার। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধও জানানো হয়েছে, যাতে তারা দ্রুত এসব ব্যক্তির জাতীয়তা যাচাই করে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এক সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যাঁরা অবৈধভাবে ভারতে রয়েছেন—তাঁরা বাংলাদেশি হোক কিংবা অন্য কোনো দেশের—তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের কাছে বর্তমানে দুই হাজার ৩৬৯ জনের একটি তালিকা রয়েছে, যাঁরা বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত। তাঁদের অনেকেই ইতোমধ্যে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে শাস্তির মেয়াদ শেষ করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশ এখনো তাঁদের জাতীয়তা যাচাই শেষ করেনি, ফলে ফেরত পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।”

জাতীয়তা যাচাই ঝুলে আছে ২০২০ সাল থেকে

ভারতীয় কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই জাতীয়তা যাচাইয়ের কাজ ২০২০ সাল থেকে ঝুলে আছে। দীর্ঘ তিন বছরের বেশি সময় ধরে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একাধিকবার বাংলাদেশ সরকারের কাছে এসব ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য যাচাইয়ের অনুরোধ জানালেও কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

জয়সোয়াল বলেন, “বাংলাদেশ সরকারকে আমরা পুনরায় অনুরোধ জানিয়েছি, যেন দ্রুত জাতীয়তা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এই ব্যক্তিদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। আমাদের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি পুরোপুরি রয়েছে।”

আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে

ভারত সরকারের দাবি অনুযায়ী, যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে বা অবস্থান করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া নজরদারি চলছে এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আটক, বিচার ও কারাদণ্ড দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বর্তমানে যে ২,৩৬৯ জন বাংলাদেশির কথা বলা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অনেকে কারাবাস শেষ করলেও “আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায়” তাঁরা দেশে ফিরতে পারছেন না। এতে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অনেকের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় ধরে আটক থাকায় এসব ব্যক্তির জীবনযাপন, স্বাস্থ্য, ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

ঢাকার দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ আছে কি?

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়ায় না, বরং মানবিক দিক থেকেও উদ্বেগের সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ যদি নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বিলম্ব করে, তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে দায়ভার এড়ানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

অন্যদিকে, ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা অবস্থান কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। জাতীয় নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে তারা।

উপসংহার: দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমঝোতার প্রয়োজন

বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি বিষয় স্পষ্ট—ভারত প্রস্তুত, কিন্তু বাংলাদেশ এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ এবং কূটনৈতিক স্তরে সক্রিয় সমঝোতা ছাড়া এই জটিলতা কাটানো সম্ভব নয়। বিশেষ করে যখন বিষয়টি জাতীয়তা, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মতো স্পর্শকাতর ক্ষেত্রে পৌঁছায়।

এই দুই হাজার ৩৬৯ জনের ভাগ্য এখন নির্ভর করছে বাংলাদেশের হাতে। তারা কি ফিরবে নিজের মাতৃভূমিতে? নাকি বিদেশের বন্দিদশায় অপেক্ষার প্রহর গুনবে আরও কয়েক বছর?

Tidak ada komentar yang ditemukan