৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ দিনটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে কেবল একটি তারিখ হিসেবে নয়, বরং এক অলৌকিক পুনর্জাগরণের দিন হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন, হাজারো চড়াই-উৎরাই আর ৬ হাজার ৩১৪ দিনের প্রতীক্ষার প্রহর শেষে বীরের বেশে প্রিয় মাতৃভূমিতে পা রাখলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন ‘দেশনায়ক’ তারেক রহমান। তাকে বরণ করে নিতে রাজধানী ঢাকা গতকাল পরিণত হয়েছিল এক অকল্পনীয় জনসমুদ্রে, যা অতীতের সকল রেকর্ডকে ম্লান করে দিয়েছে।
জনসমুদ্র নয়, এ যেন জনতার মহাসাগর বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই ঢাকার রাজপথ ছিল জনতার দখলে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া দেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে মানুষের স্রোত মিশেছিল ঢাকার বুকে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট পর্যন্ত এলাকাটি আক্ষরিক অর্থেই পরিণত হয়েছিল জনতার মহাসাগরে। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না কোথাও। ভবনের ছাদ, ল্যাম্পপোস্ট, এমনকি বিলবোর্ডের ওপর দাঁড়িয়েও মানুষ একনজর প্রিয় নেতাকে দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুনেছে।
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঐতিহাসিক সংবর্ধনায় ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রযুক্তির হিসাব দিচ্ছে আরও বিস্ময়কর তথ্য। বিটিআরসি (BTRC)-এর তথ্যমতে, তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে এদিন ঢাকায় ১ কোটি ১০ লাখের বেশি নতুন সিমের উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছে। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে, এটি কোনো সাধারণ রাজনৈতিক সমাবেশ ছিল না; এটি ছিল এক গণজাগরণ, এক বাঁধভাঙা উৎসব।
অশ্রুসজল চোখে বীরের বরণ দুপুর পৌনে ১টা। তারেক রহমানকে বহনকারী বিমানটি যখন ঢাকার মাটি স্পর্শ করে, তখন বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষমাণ লাখো জনতার গর্জনে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। বিমান থেকে নামার পর এক অভূতপূর্ব আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দেড় যুগ পর প্রিয় নেতাকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাজারো নেতাকর্মী। ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে, স্লোগানে স্লোগানে তাকে বরণ করে নেওয়া হয়।
বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে তিনি যখন ছাদখোলা বাসে আরোহণ করেন, তখন দুপাশে দাঁড়িয়ে থাকা জনতার ঢল যেন বাঁধ মানছিল না। প্রত্যেকের চোখে ছিল এক অকৃত্রিম ভালোবাসা, মুখে ছিল বিজয়ের হাসি।
আস্থার নতুন দিগন্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন কেবল একজন ব্যক্তির ফেরা নয়, এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ফেরা। ১ কোটিরও বেশি মানুষের এই উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, দেশের মানুষ তার ওপর কতটা আস্থা রাখে। তিনি এখন আর কেবল একটি দলের নেতা নন, তিনি হয়ে উঠেছেন ১৭ কোটি মানুষের আশা-ভরসার একমাত্র প্রতীক।
৩০০ ফিটে ইতিহাসের সাক্ষী পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংবর্ধনা মঞ্চে যখন তিনি এসে দাঁড়ান, তখন মনে হচ্ছিল পুরো বাংলাদেশ যেন সেখানে জড়ো হয়েছে। মাইকে তার কণ্ঠস্বর ভেসে আসতেই পিনপতন নীরবতা নেমে আসে, আবার পরমুহূর্তেই উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা। তারেক রহমান তার বক্তব্যে যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শুকরিয়া আদায় করেন এবং দেশগড়ার ডাক দেন, তখন উপস্থিত জনতা তাকে সমর্থন জানিয়ে গগনবিদারী স্লোগান দেয়।
২৫ ডিসেম্বরের এই দিনটি প্রমাণ করে দিল, নিপীড়ন আর নির্বাসন দিয়ে ভালোবাসা মুছে ফেলা যায় না। তারেক রহমান ফিরেছেন রাজার মতো, আর জনগণ তাকে গ্রহণ করেছে তাদের ত্রাণকর্তা হিসেবে। এই ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতি আগামী দিনের বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথ যে সম্পূর্ণ বদলে দেবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশ আজ দেখল এক নতুন সূর্যোদয়, যার নাম তারেক রহমান।



















