ট্রাম্পের নির্দেশে ফেরত: যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরলেন ৫ অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির বাস্তবায়ন শুরু—বিশেষ ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় ফিরলেন পাঁচ বাংলাদেশি, রয়েছেন একজন নারীও। আরও অনেককে পর্যায়ক্রমে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু।..

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় ফিরলেন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীরা: শুরু হলো ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে কঠোর পদক্ষেপ। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনিক নির্দেশ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় এবার সেই নীতির আওতায় পড়েছে বাংলাদেশিরাও। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথমবারের মতো একদল অবৈধ বাংলাদেশিকে বিশেষ ফ্লাইটে করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে গ্রিফন এয়ারের (জিআরপি-২৬) একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইট, যেটি বহন করছিল পাঁচজন বাংলাদেশি অভিবাসীকে। তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এরা সবাই ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত কড়া অভিবাসন নীতির আওতায় গ্রেফতার হন এবং দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

গ্রিফন এয়ার একটি মার্কিন বিমান সংস্থা, যা সাধারণত মার্কিন সামরিক বাহিনীর জন্য চার্টার সার্ভিস সরবরাহ করে। সম্প্রতি এই সংস্থাটি নেপালের অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর কাজেও যুক্ত ছিল। এবার একই পথে ফেরানো হলো বাংলাদেশিদের।

ফেরত আসা পাঁচজনের মধ্যে আছেন কুমিল্লার একজন, নোয়াখালীর দুইজন, চট্টগ্রামের একজন এবং সিলেট জেলার একজন। তাদের মধ্যে একজন নারী অভিবাসীও রয়েছেন, যিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন বলে জানায় সূত্র।

সূত্র জানায়, এই ফ্লাইটটি মূলত শুক্রবারই ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতা ও সময়সূচি পরিবর্তনের কারণে তা একদিন পর অর্থাৎ শনিবার অবতরণ করে। ঢাকায় পৌঁছার পর অভিবাসন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের নিজ নিজ জেলায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

ফেরত পাঠানোর এই প্রক্রিয়া এখানেই থেমে নেই। কূটনৈতিক সূত্র আরও নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আরও বহু বাংলাদেশি যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বসবাস করছেন, তাদের বিরুদ্ধেও একই প্রক্রিয়া চালানো হবে। এদেরকে শনাক্ত করে ধাপে ধাপে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মার্কিন দপ্তর।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই উদ্যোগ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও কঠোর হচ্ছে বলে ধারণা করছেন তারা।

এদিকে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এই বিষয়ে অবগত এবং ফেরত আসা নাগরিকদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ইস্যু সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল একটি বিষয়। বিভিন্ন সময় বৈধতার অভাবে বাংলাদেশিসহ বহু অভিবাসীকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও আইনি জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়েছে। এবার সেই বাস্তবতায় যুক্ত হলো এক নতুন অধ্যায়—বিশেষ ফ্লাইটে ফেরত আসার মতো ঘটনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা বিদেশে পাড়ি জমাতে চান, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে, তাদের অবশ্যই বৈধ প্রক্রিয়ায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অবৈধ পথে গেলে যেমন ঝুঁকি বাড়ে, তেমনি পরিবার ও আর্থিক বিনিয়োগ—সবকিছুই এক ঝটকায় শেষ হয়ে যেতে পারে।

শেষ কথা:
এই ঘটনা শুধু পাঁচজন মানুষকে ফেরত পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি বড় বার্তা বহন করছে—আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতিতে বদলের ইঙ্গিত এবং বৈধতার প্রয়োজনীয়তার শক্ত বার্তা। এখন সময় সচেতন হওয়ার, আইন মেনে চলার।

No comments found


News Card Generator