close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ট্রাম্পের যৌন কেলেঙ্কারি নিয়ে ইলন মাস্কের পোস্ট

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইলন মাস্ক সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, এপস্টিনের গোপন যৌন কেলেঙ্কারি নথিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম রয়েছে! তবে কেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় পোস্টটি সরিয়ে ফেললেন মাস্ক? ভেতরে কী এমন আছে, যা আমেরিকার রাজনীতিকে কাঁপিয়ে দ..

আমেরিকার রাজনীতিতে আবারও চরম উত্তেজনা। কারণ এবার মুখ খুলেছেন কেউ আর নন, স্বয়ং টেসলা ও স্পেসএক্সের কর্ণধার ইলন মাস্ক। একটি বিতর্কিত পোস্টে তিনি দাবি করেন—পর্ন সম্রাট জেফ্রি এপস্টিনের যৌন অপরাধ সংশ্লিষ্ট গোপন নথিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। এক্স-এ (সাবেক টুইটার) নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে মাস্ক একটি বিস্ফোরক পোস্ট দেন, যেখানে ইঙ্গিত করা হয় যে এপস্টিন সংক্রান্ত যেসব নথি আজও জনসমক্ষে আসেনি, সেগুলোর ভেতরে রয়েছে এমন তথ্য যা ‘দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দিতে পারে।’ এবং তিনি সোজাসুজি ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করে বলেন—“এই তথ্য মনে রাখবেন, একদিন সব সত্যিই সামনে আসবে।”

 

মাস্কের ওই পোস্টে ছিল এক ধরনের গোপন হুমকির ইঙ্গিত, যা পাঠকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও উৎকণ্ঠা ছড়ায়। তিনি কোনো নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তিকে দায়ী না করলেও, ট্রাম্পের নাম নেওয়ায় বিষয়টি ঘিরে শুরু হয় জোর আলোচনা। আমেরিকান মিডিয়া ও রাজনীতিতে আবারও এপস্টিন বিতর্ক ফিরে আসে কেন্দ্রবিন্দুতে।

 

শনিবার দুপুরে মাস্ক ওই পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন। তবে ঠিক কী কারণে পোস্টটি মুছে দেওয়া হলো, তা নিয়ে মাস্ক কিংবা তার ঘনিষ্ঠ মহল কোনো মন্তব্য করেনি। এই ‘চুপ’ থাকাটাকেই অনেকে দেখছেন কৌশল হিসেবে।

ওয়াশিংটন টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, পোস্ট ডিলিট করার এই সিদ্ধান্ত হয়তো মাস্ক নিয়েছেন চাপ বা রাজনৈতিক বোঝাপড়ার কারণে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, মাস্ক ইচ্ছাকৃতভাবে ইস্যু তৈরি করে জনমত যাচাই করছিলেন।

 

ট্রাম্প ও মাস্কের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে বেশ ভালো ছিল বলে জানেন অনেকেই। কিন্তু মাস্কের সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং এই পোস্ট ড্রামা সেই সম্পর্ককে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে। গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক বলেন, “ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হোক এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সকে তার জায়গায় বসানো হোক।”
ট্রাম্প পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “ইলনের ব্যাপারে আমি হতাশ। মনে হচ্ছে, আমাদের সম্পর্ক আর আগের মতো থাকবে না।”

 

জেফ্রি এপস্টিনের মৃত্যুর পর থেকেই তার যৌন কেলেঙ্কারির ফাইল নিয়ে বারবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ভার্জিনিয়া জিফরে নামে এক নারীর মামলায় ফাঁস হওয়া নথিতে উঠে এসেছে বহু পরিচিত নাম—যেমন বিল ক্লিন্টন, স্টিফেন হকিং, এমনকি প্রয়াত মাইকেল জ্যাকসনও।

এর আগে একাধিক সূত্র দাবি করেছিল, ট্রাম্প এপস্টিনের ব্যক্তিগত জেট বিমান ‘লোলিটা এক্সপ্রেস’-এ বহুবার সফর করেছেন। যদিও এই দাবিগুলোর বেশিরভাগই কখনও প্রমাণের মুখ দেখেনি। তবুও, মাস্কের মতো একজন ব্যক্তিত্বের প্রকাশ্য পোস্ট আমেরিকার জনগণের মনে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইলন মাস্ক হয়তো কোনো গোপন অভ্যন্তরীণ তথ্য পেয়েছিলেন এবং মুহূর্তের আবেগে তা প্রকাশ করে ফেলেন। পরে আইনি পরামর্শ অনুযায়ী পোস্ট সরিয়ে নিতে বাধ্য হন।
অন্যদিকে কিছুজন বলছেন, এ ছিল মাস্কের একটি স্ট্র্যাটেজি—তিনি হয়তো চাইছেন এই বিতর্ক আরও জিইয়ে রাখতে, যাতে ট্রাম্প ও রিপাবলিকান নেতৃত্বের ওপর চাপ বাড়ে।

 

ইলন মাস্কের মাত্র কয়েক লাইনের এক্স পোস্ট আবারও ট্রাম্পের পুরনো যৌন কেলেঙ্কারি বিতর্ককে সামনে নিয়ে এসেছে। যদিও পোস্টটি ডিলিট হয়ে গেছে, তবে ততক্ষণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা মিডিয়া জগতে। এখন প্রশ্ন একটাই—এই দাবির পেছনে যদি সত্যি থাকে, তবে তা সামনে আসবে কবে? আর ইলন মাস্ক কি সত্যিই কিছু জানেন, নাকি শুধু রাজনৈতিক দাবার চাল?

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি