ট্রাম্পের আঘাতে কাঁপছে ইউএসএআইডি! মহাপরিদর্শক বরখাস্ত, ইলন মাস্ককে নতুন দায়িত্ব


ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক পল মার্টিন বরখাস্ত, ট্রাম্পের তোপে সংস্থার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID)-এর মহাপরিদর্শক পল মার্টিনকে আকস্মিকভাবে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইউএসএআইডির এক কর্মকর্তা মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হঠাৎ বরখাস্ত! কী ঘটেছে?
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, মঙ্গলবার পল মার্টিনকে ইমেইলের মাধ্যমে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এই পদক্ষেপ আসে তার অফিস থেকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র একদিন পর।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন পদক্ষেপ ইউএসএআইডির সক্ষমতাকে গুরুতরভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। এর ফলে সংস্থাটি ৮.২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অব্যয়িত সহায়তার সঠিক তদারকি করতে পারছে না।
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদেই ইউএসএআইডির বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ইউএসএআইডির প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি সংস্থাটি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও করেছেন তিনি।
সিনেট অনুমোদিত মহাপরিদর্শককে সরানো, সংকটে প্রশাসন
২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন পল মার্টিন। এই পদে নিয়োগ পেতে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। ফলে তাকে এভাবে হঠাৎ সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় প্রশাসনে নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
প্রেসিডেন্টের অফিস অব পার্সোনেলের ডেপুটি ডিরেক্টর ট্রেন্ট মোর্সের পক্ষ থেকে মার্টিনকে বরখাস্তের ই-মেইল পাঠানো হয়। তবে ই-মেইলে বরখাস্তের কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
ইউএসএআইডি দুর্নীতিগ্রস্ত! ট্রাম্পের অভিযোগ
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএআইডিকে ‘অযোগ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিহিত করেন। তিনি সংস্থাটির বিস্তৃতি কমানোর জন্য ধনকুবের ইলন মাস্ককে দায়িত্ব দিয়েছেন।
ইউএসএআইডির ১০ হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত!
বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির প্রায় ১০ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ৬০০ কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।
৮.২ বিলিয়ন ডলারের তহবিল তদারকি নিয়ে উদ্বেগ
সোমবার ইন্সপেক্টর জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের কারণে ইউএসএআইডি ভেঙে পড়ছে এবং সংস্থাটি ৮.২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান সঠিকভাবে তদারকি করতে পারছে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কর্মী ছাঁটাই এবং কার্যক্রম বন্ধের কারণে আন্তর্জাতিক সাহায্য বিতরণে বিশাল সমস্যা দেখা দিয়েছে।
ইলন মাস্কের ওপর নতুন দায়িত্ব! কী হতে পারে ভবিষ্যৎ?
ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইলন মাস্কের নেতৃত্বে ইউএসএআইডির বর্তমান কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। তবে এ নিয়ে এখনো মাস্ক বা হোয়াইট হাউস কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন সহায়তা প্রদানকারী অন্যতম বৃহৎ এই সংস্থাটির ভবিষ্যৎ এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউএসএআইডি বন্ধ হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য নীতিতে বড় ধরনের ধস নামবে।
এই বরখাস্তের পেছনে আসল কারণ কী? ট্রাম্প কি সত্যিই ইউএসএআইডিকে ধ্বংস করতে চান, নাকি এটি শুধুই প্রশাসনিক রদবদল? বিশ্ববাসী এখন সেই উত্তরের অপেক্ষায়!
Inga kommentarer hittades