মধ্যপ্রাচ্য যেন ক্রমেই রূপ নিচ্ছে এক দহনময় ভূখণ্ডে। সেই আগুনে নতুন করে ঘি ঢেলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সম্প্রতি এক ঘোষণায় জানান, ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এটি কার্যকর হবে। তবে এই ঘোষণার পরই বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরানের প্রভাবশালী সংবাদ সংস্থা ফার্স নিউজ এজেন্সি।
সংস্থাটি দাবি করেছে, ট্রাম্পের এই বক্তব্য একেবারেই ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’। ফার্স নিউজ, যা ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কোর (IRGC)-এর সাথে যুক্ত, তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, এখন পর্যন্ত ইরান কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পায়নি।
একটি অপ্রকাশিত সূত্রের বরাত দিয়ে ফার্স জানায়, ইরান এই ঘোষণার পাল্টা প্রতিক্রিয়া খুব শিগগিরই দেবে এবং ইসরায়েল বুঝতে পারবে — যুদ্ধবিরতির ঘোষণা শুধুই এক মার্কিন নাটক।
সূত্রটি আরও যুক্ত করেছে, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মূলত দোহায় তাদের ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর চাপে পড়ে এমন ঘোষণা দিয়েছে। এটি একমাত্র উদ্দেশ্য, বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিজের অপমান ঢেকে ফেলা।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণাটি ছিল অনেকটা নাটকীয়। তিনি বলেন,ইরান ও ইসরায়েল এক পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই চুক্তি চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানের পথ খুলে দেবে।
তিনি আরও যোগ করেন,এই যুদ্ধ হয়তো বছরের পর বছর চলত এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্য ধ্বংস হয়ে যেত। কিন্তু আমরা তা রুখে দিয়েছি। ঈশ্বর ইসরায়েল, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র এবং সমগ্র বিশ্বকে আশীর্বাদ করুন।
এই ঘোষণার ঠিক কিছু ঘণ্টা আগে ইসরায়েল তেহরানের সেভেনথ ডিস্ট্রিক্ট এলাকার সাধারণ জনগণকে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়, যার পরে সেখানে বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরায়েলের বেশ কিছু অঞ্চলের জন্য সতর্কতা জারি করে, যেখানে সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ফলে বোঝাই যাচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা নয়, বরং সামরিক প্রস্তুতি ও পাল্টা হামলার আবহই প্রকট হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান যদি সত্যিই ট্রাম্পের ঘোষণাকে অস্বীকার করে এবং প্রতিশোধমূলক কোনো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে এ যুদ্ধবিরতি ঘোষণাকে ইতিহাসে “একতরফা অপপ্রচার” হিসেবে চিহ্নিত করা হতে পারে। বিশেষ করে যখন ফার্স নিউজ এমন সূত্রের দাবি করছে, যাদের মতে ইসরায়েলকে জবাব দেওয়ার জন্য ইরান প্রস্তুত।
এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্য আবারো এক জ্বলন্ত পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। ট্রাম্পের কৌশলগত নাটকীয়তা এবং ইরানের কড়া পাল্টা বক্তব্য এক অনিশ্চয়তা এবং সংঘাতের আগুনে ঘৃতাহুতি দিচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা যতই আশাব্যঞ্জক হোক না কেন, বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। ইরান সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ার হুমকি দিয়েছে। ফলে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত এখনো এক রক্তক্ষয়ী বাস্তবতা হিসেবে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			