close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ট্রা ম্প কি আমেরিকার নাকি নে তা নি য়াহুর প্রতিনিধি? ই রা নে হা মলায় কংগ্রেসে উত্তাল বিতর্ক....

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া ইরানে হামলায় ক্ষোভে ফুঁসছে যুক্তরাষ্ট্র। নেতানিয়াহুর কথায় চলছে ট্রাম্প প্রশাসন—অভিযোগ রাশিদা তালিবের। সামনে আসছে বড় রাজনৈতিক সংঘাত।....

যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলা চালিয়েছে, যা নিয়ে দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও নিন্দার ঝড়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেসে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। ডেমোক্র্যাটদের অনেকে একে সরাসরি "সংবিধান লঙ্ঘন" বলে উল্লেখ করেছেন এবং কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়া হামলা চালানোয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশেষ করে ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত কংগ্রেসওমেন রাশিদা তালিব এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ আর কোনো চিরস্থায়ী যুদ্ধ চায় না। মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক যুদ্ধ আমাদের কেবল ধ্বংসই এনেছে। এসব যুদ্ধ মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে চালানো হয়েছে। এখন আবার ইরানকে ধ্বংসাত্মক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র বানিয়ে সেই একই ফাঁদে ফেলা হচ্ছে আমেরিকানদের।"

তালিব আরও বলেন, ট্রাম্প আমেরিকানদের কথা শুনছেন না। তিনি শুনছেন সেই নেতানিয়াহুর কথা, যিনি যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত এবং অতীতে ইরাক নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। এখন আবার ইরানকে ঘিরে সেই পুরনো স্ক্রিপ্ট চালাচ্ছেন।

তালিবের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন ডেমোক্র্যাট দলের আরও অনেক আইনপ্রণেতা। তারা মনে করছেন, প্রেসিডেন্টের একক সিদ্ধান্তে এই ধরনের সামরিক অভিযান মার্কিন সংবিধান ও গণতন্ত্রের মৌলিক নীতির পরিপন্থী। বিশেষ করে যুদ্ধের মতো গুরুতর সিদ্ধান্তে কংগ্রেসের অনুমতি অপরিহার্য।

তিনি কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা অবিলম্বে নিজেদের যুদ্ধ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই হামলার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। এই যুদ্ধটা আমাদের না, এটা নেতানিয়াহুর যুদ্ধ,—এভাবেই হুঁশিয়ারি দেন তালিব।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এখন যুদ্ধবিরোধী মনোভাব আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি স্পষ্ট। বিভিন্ন জরিপ ও রাজনীতিবিদদের বক্তব্যে এটি প্রতিফলিত হচ্ছে। আইনপ্রণেতাদের একটি বড় অংশ এখন মনে করছেন, প্রেসিডেন্টের একক সিদ্ধান্তে বিদেশে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অবমূল্যায়ন

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান ইস্যুতে হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেসের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও ঘনীভূত হতে যাচ্ছে। এই রাজনৈতিক উত্তেজনা শুধু পররাষ্ট্রনীতিতে নয়, আগামী নির্বাচনেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

নেতানিয়াহুর অতীতের ভূমিকা এবং ইরাক যুদ্ধের সময় মিথ্যা তথ্য প্রচারের ইতিহাস এখন আবার সামনে এনে দেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এমন একজন নেতার পরামর্শে চলা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কেবল বিপদই ডেকে আনবে।

তালিবের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, তিনি ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে শুধু ভুল বলছেন না, বরং একে একটি বিদেশি নেতার প্ররোচনায় নেওয়া সিদ্ধান্ত হিসেবেও দেখছেন। এটি শুধু আমেরিকানদের স্বার্থ বিরোধী নয়, বরং মার্কিন রাজনীতিকে এক ভয়াবহ দিকেও ঠেলে দিতে পারে।

সবচেয়ে আশঙ্কাজনক দিক হলো, ট্রাম্প প্রশাসন যুদ্ধকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। পূর্বে এমন নজিরও আছে, যখন প্রশাসনগুলো ভোটের আগে "বাহ্যিক শত্রু" সৃষ্টি করে অভ্যন্তরীণ সমালোচনা আড়াল করেছে।

এই মুহূর্তে ইরানে হামলা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত যে শুধুই সামরিক নয়, বরং তা গভীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত—এমন ধারণা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।

এই ঘটনায় শুধু ইরান নয়, চাপে পড়ছে আমেরিকার নিজস্ব গণতান্ত্রিক কাঠামো। কংগ্রেস বনাম প্রেসিডেন্টের সংঘাত কি নতুন যুদ্ধের জন্ম দেবে, নাকি আমেরিকা নিজের গায়ে আগুন না লাগিয়ে ফিরে আসবে যুক্তি ও সংবিধানের পথে—তা এখন সময়ই বলে দেবে।

Geen reacties gevonden