তিনটি সামরিক স্থাপনায় হা মলা চালিয়েছে পাকিস্তান, বলছে ভারত..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি ঘিরে চরম উত্তেজনা—কাশ্মির ও পাঞ্জাবে ব্ল্যাকআউট, সাইরেন বেজে আতঙ্ক ছড়াল শহরজুড়ে। পাকিস্তান সব দায় অস্বীকার করলেও পরিস্থিতি রুদ্ধশ্বাস।..

জম্মু-পাঠানকোট-উধমপুরে ‘পাকিস্তানি হামলার’ দাবিতে উত্তপ্ত সীমান্ত, অন্ধকারে কাশ্মিরের শহরগুলো

ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে, পাকিস্তান থেকে পরিচালিত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে জম্মু ও কাশ্মির এবং পাঞ্জাবের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায়। এই হামলার লক্ষ্য ছিল জম্মুর উধমপুর, পাঞ্জাবের পাঠানকোট ও কাশ্মিরের আরও কিছু সামরিক ঘাঁটি। বিস্ফোরণের ঘটনা এবং পরে পুরো এলাকার ব্ল্যাকআউট পরিস্থিতিকে আরও আতঙ্কজনক করে তোলে।

ঘটনার পরপরই ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, হামলাগুলো সময়মতো প্রতিহত করা হয়েছে এবং কোনও উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) পোস্টে ভারতীয় সেনাবাহিনী আরও দাবি করে, "এই হামলাগুলো নিস্ক্রিয় করা হয়েছে এবং আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।"

 বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল জম্মু শহর, তারপরেই ব্ল্যাকআউট

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সন্ধ্যার পর জম্মু শহরে একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে স্থানীয় জনগণ। এরপরই পুরো শহর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। শুধু জম্মু নয়, শহরের নিকটবর্তী রাজৌরি এবং কাঠুয়া অঞ্চল থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে জানান, বিস্ফোরণের পর মুহূর্তেই বিদ্যুৎ চলে যায়, দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় এবং এলাকায় সাইরেন বাজানো শুরু হয়। আতঙ্কে মানুষ দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমি বিমানবন্দরের কাছে ১৬টি বস্তুর মতো কিছু পড়তে দেখেছি, যা বিস্ফোরণের আগেই নজরে আসে।”

 ড্রোনে ‘লয়েটারিং মিউনিশন’ প্রযুক্তি, বিস্ফোরণের পর গায়েব হয়ে যায়!

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা ANI জানিয়েছে, পাকিস্তান যে ধরনের ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেগুলো ছিল ‘Loitering Munition’। এই ড্রোনগুলো টার্গেটে পৌঁছে বিস্ফোরণ ঘটায় এবং নিজেই ধ্বংস হয়ে যায়, যা ট্র্যাক করা কঠিন করে তোলে।

এ ধরনের হামলার ফলে শুধু সামরিক এলাকা নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। চন্ডীগড় শহরেও বিমান হামলার আশঙ্কায় সাইরেন বাজানো হয় এবং দ্রুত ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হয়।

 পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া: ‘ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগ’

ভারতের অভিযোগকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেন, “কাশ্মিরে বা ভারতের অভ্যন্তরে হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই। ভারত নিজেদের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ঢাকতে আমাদের দোষারোপ করছে।”

পাকিস্তান এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় দাবি করলেও, সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।


 পরিস্থিতি এখন কোন পর্যায়ে?

বর্তমানে জম্মু, রাজৌরি, কাঠুয়া ও পাঠানকোটে নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পুরো অঞ্চলজুড়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং সামরিক তৎপরতা দৃশ্যত বাড়ছে।

বলা হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষ।


 

কাশ্মির ও পাঞ্জাবে এই ‘হামলা’ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি অবস্থান আবারও অঞ্চলটিকে অস্থির করে তুলেছে। ব্ল্যাকআউট, সাইরেন ও বিস্ফোরণের ছায়ায় থাকা সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত। আন্তর্জাতিক মহল এখন নজর রাখছে—এই পরিস্থিতি কি আরেকটি বড় সংঘর্ষের ইঙ্গিত দিচ্ছে?

No comments found


News Card Generator