প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজের নির্মম হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে চরম আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এরই ধারাবাহিকতায় থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী এবং দলটির অন্যতম তরুণ মুখ ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ইশরাক স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন, “প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির ছাত্র পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের প্রত্যেককে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছে, আর কেও বাকি থাকলে তাদেরকেও ধরতে হবে।”
তিনি আরও লেখেন, “যদি শুনি কেও বা কারা বা কোথাও থেকে প্রশাসনকে বাঁধাগ্রস্ত করা হচ্ছে, তাহলে ঢাকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে থানা ঘেরাও দেওয়া হবে।”
এই বক্তব্য স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রশাসনিক গাফিলতি কিংবা রাজনৈতিক প্রভাবের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে প্রস্তুত।
ছাত্রদলের কর্মসূচি ঘোষণা: দেশজুড়ে বিক্ষোভ
এদিকে পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে দেশব্যাপী এক দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। রোববার (২০ এপ্রিল) ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা ও প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৩ ব্যাচের টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে সন্ত্রাসীরা ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আমরা স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ।”
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই কর্মসূচির অনুমোদন দেন। তারা সারা দেশের ছাত্রদল নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান যেন প্রতিটি ইউনিট বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সফলভাবে বাস্তবায়ন করে।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার (২১ এপ্রিল) সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদল বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড ও তার প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে দেশের রাজপথে ফের উত্তেজনা বাড়তে পারে। বিশেষ করে ইশরাক হোসেনের মতো নেতার সরাসরি থানার ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি একটি বড় রাজনৈতিক বার্তা বহন করে।
ছাত্রদলের এই ক্ষোভ এবং সরব অবস্থান আগামীতে বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কীভাবে প্রতিফলিত হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ইশরাকের মন্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তবে সার্বিক পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, পারভেজ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আন্দোলন ক্রমেই আরও বিস্তৃত ও সংঘবদ্ধ রূপ নিতে পারে।