ইরানের রাজধানী তেহরান যেন রবিবার এক নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক আগ্রাসী হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর কেন্দ্রস্থল ঐতিহাসিক ইনকিলাব স্কয়ারে আয়োজিত জনসমাবেশে সরাসরি অংশ নিলেন দেশটির সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান। জনতার মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাতে ইরানি পতাকা নিয়ে স্লোগানে অংশ নিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন—এই লড়াই কেবল রাজনীতি নয়, এটি ইরানের অস্তিত্বের প্রশ্ন।
বিক্ষোভের মূল উপলক্ষ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রতিবাদ। যদিও হামলার বিস্তারিত এ প্রতিবেদন উল্লেখ করেনি, তবে সেটি যে ইরানকে নতুন করে নাড়া দিয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে হাজারো মানুষের বিক্ষোভেই।
ইরানের ফার্স নিউজ এজেন্সির প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ইনকিলাব স্কয়ারে জড়ো হয়েছেন। তারা একসঙ্গে চিৎকার করছেন “ডেথ টু আমেরিকা! ডেথ টু ইসরায়েল!”—এই ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়েছে রাজধানীর আকাশেও।
সবচেয়ে চমকপ্রদ ও নজিরবিহীন ঘটনা—নতুন প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের নিজে উপস্থিত হওয়া। তিনি শুধু দর্শক ছিলেন না, ছিলেন বিক্ষোভকারীদের অংশ।
মেহের নিউজ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, তিনি নিজ হাতে জাতীয় পতাকা তুলে নিয়ে পাশে থাকা জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজনের হাতে ছিল স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড, যেমন:
- 
“আমেরিকা, আমাদের পবিত্র ভূমি থেকে বিদায় নাও” 
- 
“ইরান আমাদের মাতৃভূমি, তার পতাকা আমাদের কাফন” 
- 
“ইসরায়েল মানে অশান্তি, আমেরিকা মানেই আগ্রাসন” 
এগুলো ছিল শুধুই কিছু নমুনা—এমন শত শত প্ল্যাকার্ডে ছেয়ে গিয়েছিল ইনকিলাব স্কয়ার।
এই বিক্ষোভ কেবল রাজনৈতিক ছিল না, ছিল আবেগঘন ও ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ।
ইরানের জনগণ বার্তা দিয়েছে—জাতীয় স্বার্থে সবাই এক কণ্ঠ। রাজনীতি, ধর্ম, জাতিসত্তা—সব ভেদাভেদ ভুলে তারা দেশের সম্মান রক্ষায় একত্রিত হয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বার্তা বহন করে। এর মাধ্যমে তিনি শুধু দেশের জনগণের কাছেই নয়, বিশ্ব শক্তিগুলোর কাছেও স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছেন—ইরান আগ্রাসনের সামনে মাথা নোয়াবে না।
সিএনএনের প্রতিবেদনে এই ঘটনাকে “A Rare Presidential Move in the Streets” বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই ধরনের পদক্ষেপ সাধারণত রক্ষণশীল মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে দেখা যায় না।
মাসউদ পেজেশকিয়ানের এই বিক্ষোভে যোগদান অনেক বড় বার্তা। একদিকে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান; অন্যদিকে, জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ তৈরির রাজনৈতিক কৌশলও বটে।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			