ইরানের রাজধানী তেহরান রাতে এক ভয়াবহ যুদ্ধক্ষেত্রের মর্মান্তিক চিত্রে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতভর শহরের বিভিন্ন অংশে বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে থরথর করে ওঠে পুরো শহর। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তেহরানের বাসিন্দারা জানান, শহরের পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত বিকট বিস্ফোরণের ধ্বনির মধ্যে আরেকটি দীর্ঘ ঘুমহীন রাত পেরিয়েছেন তারা।
তেহরানের এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেছেন, "শহরের ওপর ক্রমাগত হামলা অব্যাহত আছে। ভয়াবহ এক পরিস্থিতি, আরেকটি ঘুম হারানো রাত।" এর আগে ইসরায়েলি বাহিনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবিলম্বে সরে যাওয়ার জন্য তিনটি সতর্কতা জারি করেছিল, যা কিছু বাসিন্দার কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়েছে কারণ ইরানে এখনও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
একজন বাসিন্দা আরও বলছেন, "আমরা ভয়ের মধ্যে আছি। বিস্ফোরণের শব্দ আমাদের মানসিক শান্তি কেড়ে নিচ্ছে। কেন এত দেরি করে জেগে থাকতে হচ্ছে এই বিপর্যয় দেখার জন্য?" তিনি মর্মাহত বোধ করছেন এই পরিস্থিতিতে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, ১৩ জুনের পর আজকের রাতটাই ছিল সবচেয়ে তীব্র বিমান প্রতিরক্ষা সংঘর্ষের রাত। যদিও ভোর চারটার দিকে বিস্ফোরণ কিছুটা কমে যায় বলে বাসিন্দারা জানিয়েছে, তবে উত্তেজনা কাটেনি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি ইসরায়েলকে আক্রমণ বন্ধ করার জন্য ভোর ৪টার মধ্যে সময়সীমা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের তৎপরতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। কিন্তু এই ঘোষণার পরেও দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
তেহরানের এই অবস্থা পুরো বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। শান্তির প্রত্যাশায় এখন সবাই তাকিয়ে আছে ভবিষ্যতের দিকে, যেখানে আবারও যেন অস্ত্র নিস্তব্ধ হয় এবং নাগরিকদের জীবন শান্তিপূর্ণ হয়।