close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

তারেক রহমানের গৃহশিক্ষক থেকে জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ জন সালাহউদ্দিন আহমেদ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিএনপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির অন্যতম নেপথ্য কারিগর সালাহউদ্দিন আহমেদ—এক সময়ের ছাত্রনেতা থেকে যাত্রা শুরু করে হয়ে উঠেছেন জিয়া পরিবারের আস্থাভাজন একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। কীভাবে এই রূপান্তর ঘটল, জানুন তার রাজ..

বাংলাদেশের রাজনীতির জটিল পথচলায় কিছু কিছু নাম থাকে যারা দৃশ্যমান রাজনীতিতে খুব বেশি আলোচিত না হলেও নেপথ্যে থেকে তৈরি করেন ঘটনাপ্রবাহের গতি। ঠিক তেমনই একজন সালাহউদ্দিন আহমেদ—বিএনপির রাজনীতির পর্দার অন্তরালে এক নিরব অথচ দৃঢ় শক্তি। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করলেও, সময়ের পরিক্রমায় তিনি হয়ে ওঠেন খোদ জিয়া পরিবারের ‘ইনার সার্কেল’-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল থেকে রাজনীতির হাতেখড়ি নেয়া সালাহউদ্দিন ছাত্রদলের একজন বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন। শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে প্রমাণ করেছিলেন তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতা। সেই অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের গুণ পরে তার রাজনৈতিক জীবন গড়ার ভিত স্থাপন করে দেয়।

তবে শুধু ছাত্র রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি। বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন। রংপুরে তার কর্মজীবন শুরু হলেও ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে বদলে যেতে থাকে তার জীবনের গতিপথ। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ নজরে আসেন তিনি। তার দক্ষতা, নম্রতা ও আনুগত্য বেগম জিয়াকে এতটাই মুগ্ধ করে যে, ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) হিসেবে তাকে নিজের কার্যালয়ে নিয়োগ দেন।

কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি সালাহউদ্দিনের সম্পর্ক—এটা শুধুমাত্র পেশাগত বা রাজনৈতিক ছিল না, এক সময় তা হয়ে ওঠে পারিবারিক। বেগম খালেদা জিয়া নিজে তাঁর ভাগ্নিকে সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করেন। এই বৈবাহিক সম্পর্ক রাজনৈতিক আস্থার এক গভীর বার্তা দেয়—যেখানে পারিবারিক ও রাজনৈতিক বন্ধন এক সুতোয় গাঁথা হয়ে যায়।

ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও সালাহউদ্দিন আহমেদ বরাবরই পরিচিত ছিলেন একজন ভদ্র, পরিমিত ও ধর্মপরায়ণ মানুষ হিসেবে। তার স্ত্রী নিয়মিত হিজাব পরেন, নামাজ-রোজায় সক্রিয় এবং তার পারিবারিক পরিবেশেও ধর্মীয় মূল্যবোধের গভীর ছাপ রয়েছে। এই পারিবারিক ধারাবাহিকতা তার রাজনৈতিক অবস্থানেও প্রতিফলিত হয়েছে—তিনি কখনও উগ্র রাজনীতিতে জড়াননি, সবসময় ভারসাম্যপূর্ণ ও মৃদু রাজনৈতিক অবস্থান পোষণ করেছেন।

তার জীবনের আরও একটি চমকপ্রদ দিক হলো—তিনি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এক সময়ের গৃহশিক্ষক। একদিকে ছাত্রনেতা, অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তা, এরপর খালেদা জিয়ার পিএস এবং পরবর্তীতে জিয়া পরিবারের আত্মীয়—এই অসাধারণ রূপান্তর তার রাজনৈতিক অবস্থানকে দিয়েছে ব্যতিক্রমী এক মাত্রা।

আজ বিএনপির রাজনীতিতে যখন নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন সালাহউদ্দিন আহমেদের মতো মানুষদের স্মরণে আনা জরুরি। কারণ, তিনি শুধু একজন নেতা নন, বরং ছিলেন দলীয় স্থিতিশীলতার এক সময়কার গুরুত্বপূর্ণ নেপথ্য নির্মাতা। তার ভূমিকাই বিএনপির একটি সময়কার সংগঠনিক দৃঢ়তার ভিত্তি গড়ে দেয়।

সালাহউদ্দিন আহমেদের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের এই সমন্বিত গল্প নতুন প্রজন্মের কাছে নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে—যেখানে নিষ্ঠা, বিশ্বস্ততা ও কৌশলগত মেধা একজন মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তার বাস্তব উদাহরণ পাওয়া যায়।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator