close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা: কোথায় আটকে আছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ফিরে আসা?..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসার বিষয়ে বিএনপির নেতারা স্পষ্ট কিছু বলতে পারছেন না। আদালতের নানা মামলার জটিলতার কারণে তিনি দেশে ফিরছেন না বলে জানিয়েছে দল। জানতে চান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন? বিস্তারিত পড়..

তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কবে?

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন একটি রহস্য। ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রত্যাশায় বিএনপির নেতাকর্মীসহ অনেকেই ধারণা করেছিলেন যে, তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন। কিন্তু সাত মাস পার হয়ে গেলেও তারেক রহমানের দেশে ফেরার কোন সুনির্দিষ্ট ঘোষণা বা আভাস নেই, যা দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, তারেক রহমান কখন দেশে ফিরবেন তা স্পষ্ট করে বলা সম্ভব হচ্ছে না। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, “তিনি যেকোনো সময় আসতে পারেন। সব কিছু বিবেচনা করে তিনি দেশে আসবেন।” এরই মধ্যে, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালও একই বক্তব্য দিয়েছেন, তিনি জানিয়েছেন, “তারেক রহমান দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে সময় অনুযায়ী তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।”

মামলা নিয়ে তারেক রহমানের অবস্থান

বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিশেষ করে, দলের নেতা-কর্মীরা সরকারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, এবং এই মামলাগুলোর অধিকাংশই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে বিএনপি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক আইনজীবী নেতা জানান, "তারেক রহমান শুধু নিজের মামলার ব্যাপারে চিন্তা করছেন না, বরং দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীদেরও বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি চান, এসব সব মামলা প্রত্যাহার করা হোক।"

বিএনপির বিভিন্ন মামলা ও খালাস

এরই মধ্যে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কিছু পুরনো মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। সর্বশেষ দেড় দশক আগে দায়ের হওয়া অর্থপাচার মামলায় তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এছাড়া, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা থেকেও তিনি খালাস পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মোট ৮২টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যেগুলোর বেশিরভাগই ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা মানহানির মামলা। তবে, তার বিরুদ্ধে এখনও কিছু মামলা চলছে, বিশেষ করে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা সম্পদ তথ্য গোপন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার মামলাটি এখনো বিচারাধীন।

বিএনপির আইনজীবীদের মতামত

বিএনপির আইনজীবীরা দাবি করছেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো রয়েছে, সেগুলো বেশিরভাগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়েছে এবং অনেক মামলার আইনি ভিত্তি ছিল না। ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলায় অভিযোগ আনা হয়, কিন্তু এই মামলায় সর্বশেষ আদালত তাকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে, যদিও এই মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন।

দেশে ফেরার সম্ভাবনা

এদিকে, সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, "এ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারেক রহমানের দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই।"

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো রয়েছে, সেগুলো বেশিরভাগই পলাতক অবস্থায় বিচার চলছে। বিশেষ করে, সম্পদের তথ্য গোপন এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার সাজার কারণে তিনি দেশে ফিরলে তাকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং সম্ভবত কারাগারে যেতে হবে। এই কারণেই তার দেশে ফিরতে ইচ্ছুক না হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।

সর্বশেষ পরিস্থিতি

২০০৮ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর, ২০০৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে চলে যান তারেক রহমান। এখন পর্যন্ত তিনি সেখানে রয়েছেন এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে তার দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানা যাচ্ছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন এবং কোন পরিস্থিতিতে তার এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হবে? বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে, রাজনৈতিক অঙ্গনে তার দেশে ফেরার প্রশ্নটি এখনো এক রহস্যের মতো রয়ে গেছে।

Nema komentara