গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গোপালচরণ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি নতুন ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়ম এবং নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ বাদ দিয়ে ভবন নির্মাণ, শ্রেণিকক্ষে নির্মাণ সামগ্রী সংরক্ষণ করে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করা এবং এলাকাবাসীর মতামত উপেক্ষাসহ একাধিক অনিয়ম ঘটেছে।
সুন্দরগঞ্জ পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আরাফাত উল ইসলামের নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ভবন নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, রড ও সিমেন্ট, যা ভবনের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ভবনটির অবস্থান এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বিদ্যালয়ের পরিবেশ এবং স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। শ্রেণিকক্ষে নির্মাণ সামগ্রী জমিয়ে রাখায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলেও দাবি করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমান ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মধ্যে অঘোষিত যোগসাজশ রয়েছে। তারা স্থানীয়দের মতামত উপেক্ষা করে নিজেদের মতো করে কাজ পরিচালনা করছেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রধান শিক্ষক পূর্বেও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মে জড়িত ছিলেন। ইতোপূর্বে বিদ্যালয়ের একটি সীমানা প্রাচীর নির্মাণ প্রকল্প দীর্ঘদিনেও অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগসহ স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের একাধিক অভিযোগ অতীতেও উঠেছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আরাফাত উল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি নতুন নয়। এবারও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ভবন নির্মাণ করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঝুঁকির মুখে ফেলা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার যৌথভাবে স্থানীয়দের মতামত উপেক্ষা করে নিজেদের সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা চাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হোক এবং অনিয়মকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘চেষ্টা করছি বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে। কিছু জায়গায় ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে, তবে কারও মতামত উপেক্ষা করার কোনো ইচ্ছে নেই।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



















