সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিপুল ভারতীয় পণ্য জব্দ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাতের আঁধারে সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিশেষ অভিযানে ৫ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি, লেহেঙ্গা, কসমেটিকস ও চকলেট জব্দ করেছে বিজিবি। আটক পণ্য শুল্ক গোডাউনে জমার প্রক্রিয়ায়।..

সুনামগঞ্জ সীমান্তে বড় ধরনের চোরাচালান প্রতিরোধে আবারও সফল হল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এক বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) ভোররাতে সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের মাদরাসা সংলগ্ন এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করে সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি)।

অভিযানে আটককৃত পণ্যের তালিকায় রয়েছে—

  • ৪,২৮৬ পিস ভারতীয় শাড়ি

  • ১৩ পিস লেহেঙ্গা

  • ৪,৯৯২ পিস কসমেটিকস সামগ্রী

  • ২০,১২০ পিস ভারতীয় চকলেট

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, এই পণ্যের মোট বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৭১ হাজার ৫২০ টাকা, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করার সামর্থ্য রাখে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান হৃদয়। তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, সহকারী পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার মো. রফিকুল ইসলাম এবং বিজিবির ২০ সদস্যের একটি চৌকস দল। পুরো টিম পরিকল্পিতভাবে অভিযানটি চালিয়ে চোরাচালানিদের ফাঁকি দিয়ে বিপুল পরিমাণ পণ্য জব্দ করে।

সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন,ঊর্ধ্বতন সদর দপ্তরের নির্দেশে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধে গোয়েন্দা তৎপরতা এবং অভিযান আরও বেগবান করা হয়েছে। এই কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও জানান, আটককৃত সব পণ্য শুল্ক গোডাউনে হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছে, এবং যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মালামাল জব্দ রাখা হবে।

এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর আগে, গত এক মাসে সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (২৮ বিজিবি) ১৪ কোটি ৮৪ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৮ টাকার ভারতীয় মালামাল আটক করেছিল। যা বিজিবির ধারাবাহিক সফলতার নিদর্শন বহন করে।

বিজিবি সূত্রে ইঙ্গিত মিলছে, সীমান্ত এলাকাগুলোতে চোরাচালান একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ালেও প্রতিনিয়ত নজরদারি ও কৌশলগত অভিযানের মাধ্যমে এসব নিয়ন্ত্রণে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্যের অবৈধ প্রবেশ কেবল দেশের বাজারকে প্রভাবিত করে না, এতে রাষ্ট্রীয় রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি স্থানীয় শিল্প ও ব্যবসায়িক পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ধরনের অভিযান তাই শুধু নিরাপত্তার অংশ নয়, বরং জাতীয় অর্থনীতির সুরক্ষার অংশ হিসেবেই দেখা উচিত।

সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিজিবির এই সফল অভিযান আবারও প্রমাণ করল, সীমান্ত চোরাচালান দমন এবং অবৈধ অর্থনীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রশাসনিক দক্ষতা, গোয়েন্দা তথ্যের কার্যকর ব্যবহার এবং সম্মিলিত তৎপরতার কারণে দেশের নিরাপত্তা বলয় দিন দিন আরও দৃঢ় হচ্ছে।

Keine Kommentare gefunden