close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘পাকিস্তানের পক্ষে’ পোস্ট করে শতাধিক গ্রেপ্তার ভারতে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পেহেলগামের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করায় ভারতের একাধিক রাজ্যে ১০০-র বেশি ব্যক্তি গ্রেপ্তার! আসাম, উত্তরপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীর ও পশ্চিমবঙ্গে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়।..

ভারতে 'পাকিস্তান সমর্থন' পোস্টে ধরা পড়লেন শতাধিক মানুষ, উত্তাল দেশজুড়ে পরিস্থিতি

পাকিস্তানের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে বিপাকে পড়েছেন শতাধিক ভারতীয় নাগরিক। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। যুদ্ধবিরতির আবহে রয়ে গেছে চরম উত্তেজনা। সেই উত্তেজনার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ জাতীয় পোস্ট ছড়ানোয় ভারতে শুরু হয়েছে কড়া নজরদারি ও ধরপাকড়।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিবিসি বাংলা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে ভারতে অন্তত ১০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা পাকিস্তানের সমর্থনে সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য বা পোস্ট করেছেন।

গ্রেপ্তার অভিযানে এগিয়ে আসাম ও উত্তরপ্রদেশ

সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম এবং উত্তর ভারতের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন রাজ্যেরই একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি—আমিনুল ইসলাম, যিনি এআইইউডিএফের বিধায়ক।

আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয় গত ২৩ এপ্রিল পেহেলগামের হামলা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে। যদিও আদালত তাকে জামিন দেয়, কিন্তু পরে তাকে আবার জাতীয় নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়।

উত্তরপ্রদেশে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ লিখে কারাগারে

উত্তরপ্রদেশে অন্তত ৩০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। রাজ্যের ১৮টি জেলা জুড়ে চলছে এ অভিযান।
বরেলির এক বাসিন্দা মুহাম্মদ সাজিদ ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ লিখে পোস্ট করায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মেরঠ জেলার এক সেলুন মালিক ও তার সহকারী একই কারণে অভিযুক্ত হয়েছেন ৭ মে।
এছাড়া মুজফফরনগরের এক বাসিন্দা আনোয়ার জামিলের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর।

কাশ্মীরে গ্রেপ্তার সাংবাদিক, বিচ্ছিন্নতাবাদ ছড়ানোর অভিযোগ

সামাজিক মাধ্যমে ভারতবিরোধী পোস্ট করে গ্রেপ্তার হয়েছেন কাশ্মীরের একজন সাংবাদিক হিলাল মীর
কাশ্মীর পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা জানিয়েছে, হিলাল মীর তাঁর পোস্টে বলেছেন, “কাশ্মীরিদের রাষ্ট্রযন্ত্র প্রতারিত করেছে”, যা যুবসমাজের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিচ্ছিন্নতাবাদ উসকে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে।

পশ্চিমবঙ্গেও পাকিস্তানপন্থি পোস্টে গ্রেপ্তার

দ্য হিন্দুর তথ্যানুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ৬ থেকে ৮ জন ব্যক্তি পাকিস্তানপন্থি পোস্ট করায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। হুগলী, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, বারাসাত, বাঁকুড়া এবং উত্তর দিনাজপুর থেকে এদের আটক করা হয়েছে।

মধ্যপ্রদেশেও চলেছে কড়া নজরদারি

মধ্যপ্রদেশের দামোহ জেলায় অন্তত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে। পুরো রাজ্যে মোট সাতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানা গেছে।


সরকারি বার্তা: ভারতবিরোধী পোস্ট মানেই শাস্তি

ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া, ‘জিন্দাবাদ’ ধ্বনি তোলা বা ভারতের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সরকার বলছে, এই ধরনের পোস্ট দেশের অখণ্ডতা ও শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য হুমকি তৈরি করছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে—সোশ্যাল মিডিয়ায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ভারসাম্য রক্ষায় আদৌ কি কোনও সীমারেখা আছে? নাকি এই গ্রেপ্তার অভিযান নতুন এক রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কের জন্ম দেবে?

No comments found


News Card Generator