close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতের মহাসমাবেশে জনস্রোত

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
৫ মে ২০১৩-র ‘গণহত্যা’র বিচার ও নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলসহ চার দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মহাসমাবেশ করছে হেফাজতে ইসলাম। নতুন করে আলোড়ন তুলেছে..

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার (৩ মে) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ডাকা মহাসমাবেশ, যেখানে অংশ নিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত হাজার হাজার কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক, ছাত্র ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

এই মহাসমাবেশের মূল উদ্দেশ্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন এবং তা আদায়ের লক্ষ্যে সরকারকে চাপ সৃষ্টি করা। ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সংঘটিত কথিত 'গণহত্যা', হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিল ও ফিলিস্তিন-ভারতে মুসলিম নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের দাবিতে আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশ কানায় কানায় পূর্ণ হতে থাকে হেফাজতের অনুসারীদের দিয়ে। শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, নীলক্ষেত হয়ে শত শত মিছিল সোহরাওয়ার্দীর দিকে রওনা হয়। চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, দিনাজপুরসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষ ঢাকায় এসে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

হেফাজতে ইসলামের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী এবং মহাসচিব সাজেদুর রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে দেশের সব স্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষকে এই সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রচারণায় ব্যয় করা হয়েছে ব্যাপক সময় ও শ্রম। লিফলেট বিতরণ, প্রচার মিছিল এবং স্থানীয় পর্যায়ে বৈঠক করে সমাবেশের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।

হেফাজতের পক্ষ থেকে উত্থাপিত চার দফা দাবি নিচে তুলে ধরা হলোঃ

১. নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও তার প্রতিবেদন বাতিল:
হেফাজতের মতে, কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো ইসলামবিরোধী ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী।

২. সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃপ্রতিষ্ঠা:
সংবিধানে ধর্মীয় মূল্যবোধ পুনঃস্থাপন ও ‘বহুত্ববাদ’-এর পরিবর্তে তাওহিদি চেতনা প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়েছে।

৩. ২০১৩ সালের ৫ মে’র ‘গণহত্যা’র বিচার ও হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার:
শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে বিচার দাবি করা হয়েছে।

৪. ফিলিস্তিন ও ভারতের মুসলিম নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান গ্রহণ:
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মুসলিম জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় দৃঢ় কূটনৈতিক ভূমিকা চায় হেফাজত।

শুক্রবার (২ মে) জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে এক সংহতি বিক্ষোভে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন,

“নারী কমিশনের নামে ধর্মবিরোধী ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটি যদি বাতিল না করা হয়, তবে আমরা রাজপথে আগুন জ্বালাব। আমরা আর বসে থাকব না।”

এসময় তিনি শাসকগোষ্ঠীকে কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আল্লাহ ও রাসুলের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেবে, তারা শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাবে না।”

বিক্ষোভ শেষে মিছিলটি বিজয়নগর, পল্টন ও আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

ঢাকার মতো বড় শহরের প্রাণকেন্দ্রে এমন বৃহৎ সমাবেশের কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল ব্যাপক। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে মোতায়েন ছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সদস্য। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

হেফাজতে ইসলাম এই মহাসমাবেশকে ‘তাওহিদি জনতার’ শক্তি প্রদর্শনের উপলক্ষ বলে অভিহিত করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই সমাবেশ দেশের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেবে।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator