কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলোচিত বক্তা মুফতি আমীর হামজাকে মনোনয়ন দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
রবিবার, ২৫ মে, কুষ্টিয়ার আব্দুল ওয়াহিদ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত জেলা জামায়াতের এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সমাবেশে এ মনোনয়নের ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোবারক হোসেন বলেন, "আমরা আজ কুষ্টিয়া-৩ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করে দেশের প্রায় অধিকাংশ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছি। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামায়াত নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, “আমরা ২০১৮ বা ২০২৪ সালের মতো নির্বাচন আর দেখতে চাই না। দেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমাদের মূল দাবি, নির্বাচন হতে হবে একটি কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে। সংস্কার এবং বিচারপ্রক্রিয়ার যথাযথ অগ্রগতি না হলে আমরা কোনো নির্বাচনকে বৈধতা দেব না।”
মুফতি আমীর হামজার প্রার্থিতা ঘিরে স্থানীয় ও জাতীয় রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। মোবারক হোসেন বলেন, “আমরা যে প্রার্থীকে কুষ্টিয়া-৩ আসনে মনোনয়ন দিয়েছি, তিনি শুধু দেশেই নন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও একজন সুপরিচিত মুখ। তার গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তা এবং ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি নিষ্ঠা আগামী নির্বাচনে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবুল হাশেম, যিনি সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জামায়াতের যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য আলমগীর বিশ্বাস ও অধ্যাপক খন্দকার এ কে এম আলী মহসীন।
এছাড়াও সমাবেশে অংশ নেন কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল গফুর, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হুসাইন, কুষ্টিয়া শহর জামায়াতের আমির এনামুল হক, ইসলামী ছাত্রশিবির কুষ্টিয়া শহর শাখার সভাপতি সেলিম রেজা এবং জেলা সভাপতি খাজা আহমেদসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের এ সিদ্ধান্ত শুধু কুষ্টিয়ায় নয়, বরং জাতীয় পর্যায়েও রাজনীতিতে নতুন বার্তা দিচ্ছে। ইসলামী মূল্যবোধকে সামনে রেখে নির্বাচনে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর কৌশল হিসেবেই আমীর হামজার মতো একজন আন্তর্জাতিক পরিচিত বক্তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
মাঠপর্যায়ে জামায়াত ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ন্যায়বিচার, সুশাসন এবং ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।
নির্বাচনী রাজনীতিতে জামায়াতের এ পদক্ষেপ কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে মুফতি আমীর হামজার প্রার্থিতা এখন থেকেই রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।



















