close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

সংকট আরও ঘনীভূত! ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা, প্রশাসনের কঠোর হুঁশিয়ারি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
নানা উদ্যোগের পরও কাটেনি ভোজ্যতেলের সংকট। জেলা প্রশাসনের একাধিক বৈঠক ও বাজার অভিযানের পরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে, সরবরাহও অপ্রতুল। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা..

ভোজ্যতেলের সংকট কাটছেই না, প্রশাসনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও চলছে অস্থিরতা

বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট যেন কমছেই না। জেলা প্রশাসনের একাধিক বৈঠক, ডিলারদের সতর্কবার্তা এবং বাজারে অভিযান পরিচালনার পরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বরং সংকট দিন দিন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। প্রশাসনের নির্ধারিত দামে কোথাও মিলছে না ভোজ্যতেল, বরং লিটারপ্রতি ২৫-৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

সংকটের প্রকৃত কারণ কী?

চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ভোজ্যতেলের অভাব আরও তীব্র। সয়াবিন তেল প্রায় উধাও! খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, ডিলাররা পর্যাপ্ত সরবরাহ করছে না। ফলে বেশি দামে তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

এক ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা যদি বেশি দামে কিনি, তাহলে কম দামে বিক্রি করবো কিভাবে? প্রশাসন শুধু খুচরা পর্যায়ে অভিযান চালাচ্ছে, কিন্তু মূল সমস্যা ডিলার এবং মিলারদের গুদামে।”

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, একাধিক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বাজার থেকে তেল গায়েব করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। খোলা বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই বললেই চলে।

জেলা প্রশাসনের কঠোর বার্তা

৪ মার্চ চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন,

“আমি দেখতে চাই, রাষ্ট্রের শক্তি বেশি না ব্যবসায়ীদের! এবার শুধু জরিমানা করবো না, কারাদণ্ডও দেব। যদি তেলের সাপ্লাই ঠিক না হয়, তবে গুদামে অভিযান চালানো হবে।”

এছাড়া তিনি জানান, প্রশাসনের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি রাখার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা যায়।

বাজারে সরবরাহ ও দামের বাস্তব চিত্র

সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারপ্রতি ২০-২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। ১ লিটারের বোতল ১৯০-২০০ টাকা, ২ লিটার ৩৯০-৪০০ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতল ৯৫০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ সরকার নির্ধারিত মূল্য ছিল যথাক্রমে ১৭৫, ৩৫০ ও ৮৭৫ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।

বন্দর থেকে আমদানির তথ্য কী বলছে?

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুসারে, গত কয়েক মাসে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়েছে।

  • নভেম্বর: ১,১২,৫৯৩ টন

  • ডিসেম্বর: ২,২২,৮৫৩ টন

  • জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি: ৩,৪২,৫২৭ টন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি হলেও সংকট কাটছে না কারণ একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ও বাজার বিশ্লেষণ

বহদ্দারহাটের ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন বলেন,

“ডিলাররা চাহিদার মাত্র ২৫% তেল সরবরাহ করছে। এছাড়া, তারা বাধ্যতামূলকভাবে চা পাতা, সরিষার তেল, আটা কিনতে বলছে। যা আমাদের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এ পরিস্থিতিতে বাজারে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট দূর করতে হলে ডিলার ও মিলারদের গুদামে সরাসরি অভিযান পরিচালনা করা জরুরি। অন্যথায়, আসন্ন রমজান মাসে এই সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।


শেষ কথা: প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও তেল মজুতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমবে না। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

Комментариев нет


News Card Generator